নিমিত্ত কারক কাকে বলে
নিমিত্ত কারক
নিমিত্ত কারক বাংলা ব্যাকরণের একটি বিতর্কিত কারক। এই বিতর্কের বিষয়ে নিচে সংক্ষেপে বলছি ; তার আগে জেনে নিই নিই নিমিত্ত কারক কাকে বলে।
কর্তা যার জন্য, যার উদ্দেশ্যে বা যে অভিপ্রায়ে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে নিমিত্ত কারক বলে।
নিচে নিমিত্ত কারকের উদাহরণগুলি লক্ষ করুন।
উদাহরণ
১: তোমার জন্য কলম আনবো। -- নিমিত্ত কারকে 'জন্য' অনুসর্গ।
২: মহারাজ শিকারে গেছেন। -- নিমিত্ত কারকে 'এ' বিভক্তি।
৩: সখি, জলকে চল। -- নিমিত্ত কারকে 'কে' বিভক্তি।
৪: চিকিৎসার উদ্দেশ্যে শহরে এসেছি। -- নিমিত্ত কারকে 'উদ্দেশ্যে' অনুসর্গ।
নিমিত্ত কারকের প্রকারভেদ
নিমিত্ত কারক দুই ভাবে হয়:
১: ফলভোগী অর্থে নিমিত্ত: যার জন্য কাজ করা হয়, কাজের ফল যে ভোগ করে, তা নিমিত্ত কারক হয়। যেমন: দেশের জন্য প্রাণ দেব; তোমার জন্য জামা এনেছি।
২: অভিপ্রায় অর্থে নিমিত্ত: যে অভিপ্রায়ে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তা নিমিত্ত হয়। যেমন: পড়াশোনার জন্য হস্টেলে থাকি।
নিমিত্ত কারক বিতর্ক
নিমিত্ত কারকের ধারণাটি বাংলা ব্যাকরণে সাম্প্রতিক কালে সংযোজিত হয়েছে। সংস্কৃতে এই ধারণাটি সম্প্রদান কারকের অন্তর্গত। সংস্কৃত ব্যাকরণে যাকে কিছু দান করা হয়, তাকে সম্প্রদান বলে। এর পাশাপাশি যার জন্য কিছু করা হয়, তাকেও সম্প্রদান বলে। অর্থাৎ --
১: "তোমাকে বইটি দিলাম" এবং ২: "তোমার জন্য বইটি কিনলাম", উভয় ক্ষেত্রেই 'তুমি' সম্প্রদান কারক। পরবর্তী সময়ে বাংলা ব্যাকরণে প্রথম প্রকার সম্প্রদানকে গৌণ কর্মের অন্তর্ভুক্ত করা হয় কিন্তু দ্বিতীয় প্রকার সম্প্রদানের ধারণাটি প্রথমটির মতো নয়। বস্তুত দুই ক্ষেত্রে ক্রিয়ার সাথে পদটির সম্পর্ক একেবারেই আলাদা। তাই এই দ্বিতীয় প্রকার সম্প্রদানকে আলাদা একটি কারক, নিমিত্ত কারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অবশ্য অনেকে ভুল করে দুই প্রকার সম্প্রদানকেই নিমিত্ত মনে করেন। আবার কেউ কেউ এমন একটি কারকের প্রয়োজন আছে বলেই স্বীকার করেন না।
নিচে কারক সম্পর্কে আমার একটি ইউটিউব ভিডিও দিলাম। এই ভিডিওতে অন্যান্য কারকের পাশাপাশি নিমিত্ত কারকটিও ভালো ভাবে বুঝিয়েছি।
আশা করি নিমিত্ত কারক সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা দিতে পেরেছি। ইউটিউবে আমার ব্যাকরণের ক্লাসগুলি শোনার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)
মন্তব্যসমূহ