পোস্টগুলি

সমাস লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

দ্বিগু সমাস ও সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাসের পার্থক্য

 দ্বিগু ও বহুব্রীহি সমাসের পার্থক্য দ্বিগু সমাসের পূর্বপদে  সংখ্যাবাচক  বিশেষণ পদ ও পরপদে বিশেষ্য পদ থাকে। সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি সমাসের ক্ষেত্রেও তাই। এই কারণে এই দুই সমাসের পার্থক্য নিরূপণ করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। দ্বিগু ও বহুব্রীহি সমাসের পার্থক্য নির্ণয় করার জন্য আমাদের সমস্তপদের অর্থটি খেয়াল করতে হবে। দ্বিগু সমাসে পরপদের অর্থ প্রধান হয়, অপরদিকে বহুব্রীহি সমাসে অন্য পদের অর্থ প্রাধান্য পায়। যেমন: 'ত্রিফলা' বললে তিনটি ফলের সমাহার বোঝায়। এখানে ফলের অর্থ‌ই প্রধান। কিন্তু 'পঞ্চানন' বললে পঞ্চ আনন যাঁর, অর্থাৎ শিবকে বোঝায়।  দ্বিগু ও বহুব্রীহি সমাস চেনার উপায় দ্বিগু সমাসে সমাহার বা বিনিময় বোঝাবে। যেমন: পঞ্চ গব্যের সমাহার = পঞ্চগব্য। তিন কড়ির বিনিময়ে কেনা = তিনকড়ি। বহুব্রীহি সমাসে অন্য একটি পদকে বোঝাবে। যেমন: দশ ভুজ যাঁর = দশভুজা। দশভুজা মানে দুর্গা। আরও পড়ুন সূচিপত্র বাংলা ব্যাকরণের যে ব‌ই আমি পড়ি

সমাস নির্ণয়ের নিয়ম ও ব্যাখ্যা সহ উদাহরণ | সমাসের উদাহরণ | Somas example in Bengali | Bengali somas practice

 সমাস নির্ণয়ের নিয়ম সমাসের উদাহরণে যাওয়ার আগে আমরা সমাস নির্ণয়ের কয়েকটি নিয়ম জেনে নেবো। ১: সমাস নির্ণয় করার আগে সমস্তপদটির অর্থ জানতে হবে। সমস্তপদের অর্থ না জেনে সমাস নির্ণয় করা প্রায় অসম্ভব। এখানে আর‌ও একটি কথা বলে রাখা ভালো, কোনো শব্দের প্রচলিত অর্থ ও মূল অর্থ আলাদা হলে মূল ও আদি অর্থটিই সমাস নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: গবেষণা শব্দের ব্যাসবাক্য হবে গো-এর এষণা, অর্থাৎ গোরু খোঁজা। বর্তমানে এই অর্থে শব্দটির ব্যবহার হয় না, কিন্তু সমাসে এই অর্থটিই ধরতে হবে। এর কারণ, সমাসবদ্ধ শব্দটি যখন তৈরি হয়েছিল, তখন এই ভাবেই হয়েছিল। ২: সমাস নির্ণয়ের দ্বিতীয় ধাপে ব্যাসবাক্য নির্ণয় করতে হবে। ব্যাসবাক্য নির্ণয় করতে গিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। যদি সমাসবদ্ধ শব্দটির অর্থ জানা থাকে, তাহলে শব্দের মূল অর্থটিকে বিশ্লেষণ করলেই ব্যাসবাক্যটি পাওয়া যায়। এখানে খেয়াল রাখতে হবে, সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ও সবচেয়ে যথাযথ বিশ্লেষণটি করতে হবে। যথাসম্ভব কম শব্দ ব্যবহার করতে হবে। এক একটি ব্যাসবাক্যকে চাইলে বড়ো করা যায়, কিন্তু তা করা যাবে না। ৩: সমাস নির্ণয়ের তৃতীয় ধাপে দেখতে হবে

উপপদ তৎপুরুষ সমাস | Upapad tatpurush somas

ছবি
উপপদ তৎপুরুষ সমাস চেনার উপায় উপপদ তৎপুরুষ সমাস চেনার সহজ উপায় নিয়ে আজকের এই আলোচনা। সেই সঙ্গে আলোচনা করবো উপপদ তৎপুরুষ সমাসের বিস্তারিত পরিচয়।  তৎপুরুষ সমাসের আলোচনায় যথাস্থানে উপপদ তৎপুরুষ সমাস আলোচনা করেছি। তার পরেও এই সমাসটি সম্পর্কে আলাদা করে বিস্তারিত আলোচনা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হলো। তার কারণ এই বিষয়টি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। পুরো আলোচনাটি একটু মনোযোগ দিয়ে ভালো করে পড়লে উপপদ তৎপুরুষ সমাস সম্পর্কে নতুন ধারণা হবে আশা করছি।  উপপদ তৎপুরুষ সমাসের বৈশিষ্ট্য উপপদ তৎপুরুষ সমাস হতে গেলে পূর্বপদটি বিশেষ্য ও পরপদটি কৃদন্ত পদ হতে হবে। কৃদন্ত পদটিকে ক্রিয়াবাচক পদ‌ও বলা যায়।  এখন বুঝে নিই কৃদন্ত পদ বলতে কী বোঝায় এবং উপপদ‌ই বা কী‌। কৃদন্ত পদ কাকে বলে কৃদন্ত কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল: কৃৎ অন্তে যার; অর্থাৎ যার শেষে কৃৎ প্রত্যয় আছে। কৃৎ+অন্ত= কৃদন্ত। আমরা জানি যে প্রত্যয়গুলি ধাতুর পরে যুক্ত হয়ে শব্দ গঠন করে তাদের কৃৎ প্রত্যয় বলে। এইভাবে ধাতুর সাথে কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে গঠিত নামপদকে কৃদন্ত পদ বলে।  কৃদন্ত পদ দুই প্রকার হয়। কতকগুলি কৃদন্ত পদ

দ্বিগু, অব্যয়ীভাব ও নিত্য সমাস

দ্বিগু সমাস দ্বিগু শব্দের অর্থ হল: দ্বি গো-এর বিনিময়ে ক্রীত। দ্বি মানে দুই এবং গো মানে গোরু। প্রাচীন কালের ভারতবর্ষে গোরুর বিনিময়ে কেনাবেচা চলতো। দুটি গোরু দিয়ে যে জিনিসটি কেনা হতো, তাকেই তখনকার দিনে দ্বিগু বলা হতো। এই দ্বিগু শব্দটি নিজেই একটি দ্বিগু সমাসের আদর্শ উদাহরণ। একটি আদর্শ উদাহরণকেই সমাসের নাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এটিই দ্বিগু সমাসের নামকরণের কারণ। দ্বিগু সমাস কাকে বলে যে সমাসের পূর্বপদে থাকে সংখ্যাবাচক শব্দ ও পরপদে থাকে বিশেষ্য  এবং পরপদ তথা বিশেষ্যটির অর্থ প্রাধান্য পায়, তাকে দ্বিগু সমাস বলে। দ্বিগু সমাস কত প্রকার? দ্বিগু সমাস দুই প্রকার। ১: সমাহার দ্বিগু: এই দ্বিগু সমাসে বিশেষ্যের সমষ্টি বা সমাহার বোঝায়।  যেমন:  পঞ্চ বাণের সমাহার: পঞ্চবান পঞ্চ নদের সমাহার: পঞ্চনদ ত্রি শূলের সমাহার: ত্রিশূল পঞ্চ গব্যের সমাহার: পঞ্চগব্য (গোময়, গোমূত্র, দধি, দুগ্ধ, ঘৃত) পঞ্চ বটের সমাহার: পঞ্চবটী এইরকম সাতসাগর, পঞ্চপাণ্ডব, নবগ্রহ, অষ্টবসু প্রভৃতি সমাহার দ্বিগুর উদাহরণ। ২ : তদ্ধিতার্থক দ্বিগু  তদ্ধিত একধরনের প্রত্যয়। এক ধরনের দ্ব

বহুব্রীহি সমাস | বহুব্রীহি সমাসের বিস্তারিত আলোচনা | Bohubrihi somas

ছবি
বহুব্রীহি সমাসের ধারণা ও প্রকারভেদ বহুব্রীহি সমাসের ধারণা ও সংজ্ঞা  বহুব্রীহি শব্দের অর্থ  "বহু ব্রীহি যার"। ব্রীহি কথার অর্থ ধান। অর্থাৎ সহজ ভাবে বললে বহুব্রীহি শব্দের অর্থ হয় যার অনেক ধান আছে বা ধনী ব্যক্তি। অতীতে ধানের দ্বারাই একজন ব্যক্তির ধনসম্পত্তি বিচার করা হত। এরপর আসি বহুব্রীহি সমাসের কথায়। দ্বন্দ্ব, তৎপুরুষ ও কর্মধারয় সমাসের আলোচনায় আমরা দেখেছি, দ্বন্দ্ব সমাসে উভয়পদের এবং তৎপুরুষ ও কর্মধারয় সমাসে পরপদের অর্থ-প্রাধান্য দেখা যায়। বহুব্রীহি সমাসের ক্ষেত্রে সমস্যমান পদগুলির মধ্যে কোনোটির অর্থ‌ই প্রকাশ পায় না। এখানে অন্য একটি পদের অর্থ প্রকাশ পায়। যেমন: 'চন্দ্রচূড়' সমাসবদ্ধ পদটির ব্যাসবাক্য হবে "চন্দ্র চূড়ায় যাঁর"। পূর্বপদ চন্দ্র, পরপদ চূড়া। কিন্তু চন্দ্রচূড় বললে 'চন্দ্র' বা 'চূড়া' কোনোটিই বোঝায় না, এর অর্থ মহাদেব বা  শিব। সুতরাং দেখা যাচ্ছে এখানে দুই সমস্যমান পদ মিলে একটি পৃথক অর্থ সৃষ্টি করল। পূর্বোল্লিখিত সমাসগুলিতে সমস্যমান পদগুলি নিজেদের অর্থের অতিরিক্ত অন্য কোনো অর্থ সৃষ্টি করেনি। বহুব্রীহি সমাসে সমস

কর্মধারয় সমাস | কর্মধারয় সমাসের বিস্তারিত আলোচনা | Karmadharoy somas

ছবি
কর্মধারয় সমাস: কাকে বলে, বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ কর্মধারয় সমাস সম্পর্কে বহু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। আমাদের এই আলোচনার উদ্দেশ্য হল কর্মধারয় সমাসের ধারণাটি স্পষ্ট করা ও কর্মধারয় সমাসের প্রতিটি ভাগ নির্ভুল ভাবে বুঝে নেওয়া। পরপদ-প্রধান সমাসগুলির মধ্যে কর্মধারয় অন্যতম। তবে মনে রাখতে হবে, কর্মধারয় সমাসকে অনেকেই আলাদা সমাস বলতে রাজি নন। তাঁরা একে তৎপুরুষ সমাসের অন্তর্ভুক্ত করতে চান। আমরা অবশ্য এই সমাসের আলোচনা করবো একটি স্বতন্ত্র সমাস হিসেবেই। বিষয়টি ভালো করে বোঝার জন্য ধীরে ধীরে, সময় নিয়ে পড়ুন। একবার বুঝে নিলে আর কখনও ভুল হবে না। কোন‌ও অসুবিধা হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান।  নিচের ভিডিওটি দেখে নিলে কর্মধারয় সমাস বুঝতে সুবিধা হবে। কর্মধারয় সমাস কাকে বলে যে সমাসে পরপদের অর্থ-প্রাধান্য থাকবে এবং পূর্বপদটি পরপদের বিশেষণের মত কাজ করবে, তাকে কর্মধারয় সমাস বলে।  যেমন: নীল যে কমল = নীলকমল, এখানে পূর্বপদ নীল হচ্ছে পরপদ কমলের বিশেষণ এবং 'নীলকমল' শব্দে কমলের‌ই অর্থপ্রাধান্য। কারণ নীলকমল বলতে এক প্রকার কমলকেই বোঝায়। মনে রাখতে হবে: (১) পরপদের প্রাধান্য এবং (২) পূর্বপদট

সমাস: সাধারণ ধারণা, দ্বন্দ্ব ও তৎপুরুষ | Somas

সমাসের সংজ্ঞা ও ধারণা 'সমাস' কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল সংক্ষেপ বা সংক্ষেপকরণ। আমরা কথা বলার সময় ভাষাকে সংক্ষিপ্ত ও সুন্দর করার উদ্দেশ্যে অর্থসম্পর্কযুক্ত একাধিক পদকে একসঙ্গে জুড়ে দিয়েছি। এর ফলে একদিকে ভাষার সংক্ষেপ যেমন হয়, তেমনি শব্দভাণ্ডারে নতুন শব্দের সমাগম ঘটে। ভাষা সমৃদ্ধ হয়। এই জুড়ে দেওয়ার কাজটিই সমাস নামে পরিচিত। এখানে অর্থসম্পর্ক বলতে কী বোঝায় তা স্পষ্ট করা দরকার। যদি আমি 'ফুটবল' ও 'মাঠ' এই দুটি পদের কথা বলি তাহলে সবার মনেই ফুটে উঠবে একটি খেলা ও একটি মাঠের ছবি। এই বিশেষ খেলাটি মাঠেই হয়। এবার আমি যদি পদদুটিকে জুড়ে দিই, বলি 'ফুটবল-মাঠ' তাহলে বোঝা যাবে, আমি বলছি "ফুটবল খেলার মাঠ"। ফুটবল খেলা মাঠে হয় বলেই এদের মধ্যে একটা যোগ আছে অথবা বলতে পারি, পদ দুটির অর্থের মধ্যে যোগ আছে। কিন্তু অন্য পদ নিলে কী হবে? ধরা যাক আমি এবার 'রাস্তা' পদটি নিলাম। 'ফুটবল' ও 'রাস্তা'। এই পদদুটির মধ্যে এরূপ কোনো যোগ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এক‌ই ভাবে 'আকাশ' ও 'মাটি' পদদুটির মধ্যেও সম্পর্ক নেই। তবে মনে রাখতে হবে,