পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শব্দ বিভক্তি কত প্রকার ও কী কী

 শব্দবিভক্তির শ্রেণিবিভাগ আমরা জানি, যে বিভক্তি শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে পরিণত করে, তাকে শব্দবিভক্তি বলে। বাংলা ভাষায় শব্দবিভক্তিগুলি পদ দেখেই চিনতে পারা যায়। বাংলায় তাই শব্দ-বিভক্তির আলাদা করে নামকরণ করা হয় না। বিভক্তির চিহ্নটিই তার নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন: "ছেলেটিকে কাছে ডাকো।" -- এই বাক্যে 'ছেলেটিকে' পদের বিভক্তি হল 'কে' বিভক্তি। কিন্তু সংস্কৃত ব্যাকরণের অনুসরণে এখনও কেউ কেউ বাংলা বিভক্তিগুলির নামকরণ করতে চান। নিচে উদাহরণ সহ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। সংস্কৃত অনুযায়ী শব্দ-বিভক্তির শ্রেণি সংস্কৃত অনুযায়ী শব্দ বিভক্তি সাত প্রকার। নিচে উদাহরণ সহ এদের নাম দেওয়া হল। কর্তৃ কারকের বিভক্তি: প্রথমা কর্ম কারকের বিভক্তি: দ্বিতীয়া করণ কারকের বিভক্তি : তৃতীয়া সম্প্রদান/নিমিত্ত কারকের বিভক্তি: চতুর্থী ** অপাদান কারকের বিভক্তি: পঞ্চমী সম্বন্ধ পদের বিভক্তি:         : ষষ্ঠী অধিকরণ কারকের বিভক্তি: সপ্তমী বাংলায় বিভিন্ন বিভক্তির চিহ্ন বাংলায় নির্দিষ্ট কারকে নির্দিষ্ট ব

ধ্বনি কাকে বলে | ধ্বনি কাকে বলে ও কয় প্রকার

 ধ্বনির সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ 'ধ্বনি' কথার আক্ষরিক অর্থ হল আওয়াজ। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যে কোনো আওয়াজ‌ই ধ্বনি, কিন্তু ব্যাকরণের পরিভাষায় যে কোনো আওয়াজকে ধ্বনি বলে না। যেমন: পাখির ডাক, মেঘের গর্জন, বাতাসের শব্দ, শাঁখের আওয়াজ, করতালির আওয়াজ, ইত্যাদিকে ব্যাকরণে ধ্বনি বলা যাবে না। আজকের এই আলোচনায়, ধ্বনি কাকে বলে, তা আমরা ভালো ভাবে জানবো। প্রথমেই ধ্বনির সংজ্ঞাটি জেনে নিই, তার পর জানবো কোন কোন শর্ত পূরণ করলে একটি শব্দকে ধ্বনি বলে এবং ধ্বনি কয় প্রকার। মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বাগ্‌যন্ত্র থেকে স্বেচ্ছায় যে আওয়াজ সৃষ্টি করে তাকে ধ্বনি বলে। কোন কোন শর্ত পূরণ করলে একটি আওয়াজকে ধ্বনি বলবো? নিচের প্রতিটি শর্ত পূরণ করলে তবেই একটি আওয়াজকে ধ্বনি বলা যাবে। ১: মনের ভাব প্রকাশের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হতে হবে। যে কোনো আওয়াজ ধ্বনি নয়। ২: মানুষের বাগ্‌যন্ত্র থেকে সৃষ্টি হতে হবে। অন্য প্রাণীদের আওয়াজ ধ্বনি নয়। ৩: আওয়াজটি মানুষের স্বেচ্ছাকৃত চেষ্টায় সৃষ্টি হতে হবে। নাক ডাকার আওয়াজ ধ্বনি নয়, টুঁটি চেপে ধরলে যে ঘড়ঘড় আওয়াজ সৃষ্টি হয়, তাও ধ্বনি নয়। ধ্বনি কয় প্রকার ধ্

অলোপ সমাস কাকে বলে

 অলোপ সমাস যে সমাসে সমস্যমান পদের বিভক্তি সমস্তপদে পরিণত হবার পরেও লোপ পায় না, বা থেকে যায়, তাকে অলোপ সমাস বলে। এর অপর নাম অলুক সমাস। সমস্যমান পদের বিভক্তি সাধারণ ভাবে সমস্তপদে গিয়ে লোপ পেয়ে যায়। এটাই সমাসের পাধারণ নিয়ম‌, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। এই ব্যতিক্রম দেখা গেলেই অলোপ সমাস সৃষ্টি হয়। নিচে উদাহরণের সাহায্যে অলোপ সমাস সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো এবং অলোপ সমাসকে আলাদা সমাস বলা যায় কিনা তা আলোচনা করা হলো। অলোপ সমাসের উদাহরণ যেমন: ঘরে ও বাইরে = ঘরেবাইরে (অলোপ দ্বন্দ্ব) দেশে ও বিদেশে = দেশে-বিদেশে (অলোপ দ্বন্দ্ব) তেলে ভাজা = তেলেভাজা (অলোপ করণ তৎপুরুষ সমাস) মুখে ভাত দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে = মুখেভাত (অলোপ বহুব্রীহি সমাস) পাগড়ি মাথায় যার = পাগড়িমাথায় (অলোপ বহুব্রীহি) উপরের উদাহরণগুলো দেখলেই বোঝা যাচ্ছে অলোপ সমাস কোনো আলাদা সমাস নয়। বিভিন্ন সমাসের মধ্যে কিছু কিছু অলোপ সমাস থাকে। তাই এটি আলাদা সমাস নয়, বরং দ্বন্দ্ব, তৎপুরুষ ও বহুব্রীহির বিশেষ ভাগ। আরও পড়ুন সূচিপত্র বাংলা ব্যাকরণের সেরা ব‌ই

খ্রিস্টাব্দ ও সালের পার্থক্য | খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দের পার্থক্য | খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দ হিসাব

 খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দ বা সাল খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দের মধ্যে একটি জানা থাকলেই কি অপরটি নির্ণয় করা যাবে? এই প্রশ্নের উত্তর হলো, "যাবে, কিন্তু শুধুমাত্র সাল বা খ্রিস্টাব্দ জানলে হবে না। সেই সঙ্গে জানতে হবে বছরের কোন সময়ের কথা বা কোন মাসের কথা বলা হচ্ছে ‌। নিচে খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দের সম্পর্কটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝানো হলো। খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দের সম্পর্ক বঙ্গাব্দ ও খ্রিস্টাব্দের সম্পর্কটা গোটা বছর সমান যায় না। ১লা বৈশাখ থেকে মোটামুটি পৌষের মাঝামাঝি (অর্থাৎ ১লা জানুয়ারি) পর্যন্ত খ্রিস্টাব্দ থেকে ৫৯৩ বিয়োগ করলে বঙ্গাব্দ পাওয়া যাবে, বা বঙ্গাব্দের সঙ্গে ৫৯৩ যোগ করলে খ্রিস্টাব্দ পাওয়া যাবে। এরপর ১৫/১৬ই পৌষ থেকে চৈত্রের সংক্রান্তি পর্যন্ত (মোট সাড়ে তিন মাস) ৫৯৪ বিয়োগ করতে হবে, কারণ এই সময় ইংরেজি নতুন বছর এসে গেলেও বাংলা নতুন বছর আসে না। তাহলে দেখা যাচ্ছে বছরের মধ্যে সাড়ে আট মাস ফ্যাক্টর সংখ্যাটি হবে ৫৯৩ এবং বাকি সাড়ে তিন মাস এই সংখ্যা হবে ৫৯৪। এখন দুটো উদাহরণ নিয়ে দেখি: অগ্রহায়ণ ১৩৬৫, এই সালটিকে খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করতে হলে আমরা ৫৯৩ যোগ করবো। কারণ পৌষের মাঝামাঝি থে

ফারসি শব্দের উদাহরণ

 ফারসি শব্দ ফারসি হল পারস্যের ভাষা। (ফারসি ও ফরাসি এক নয়। ফরাসি হল ফ্রান্সের ভাষা।) বাংলা ভাষায় ফারসি শব্দের সংখ্যা অনেক। এখানে বেশ কিছু ফারসি শব্দের উদাহরণ দেওয়া হলো। আন্দাজ, ইয়ার, কারদানি, কারসাজি, কোমর, খরচ, খরিদ্দার, খাসা, খুব, খুশি, খোরাক, গরম, গান, চশমা, চাকর, চালাক, চেহারা, জুলফি, তাজা, দরখাস্ত, দরবার, দাগ, দোকান, নরম, নাস্তানাবুদ, পছন্দ, পর্দা, পশম, পাখোয়াজ, পাঞ্জা, পালোয়ান, পেয়ালা, পোশাক, বনিয়াদ, বন্দর,বাজার

ধ্বন্যাত্মক শব্দ কাকে বলে

 ধ্বন্যাত্মক শব্দ 'ধ্বন্যাত্মক' কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল 'ধ্বনি আত্মা যার'। অর্থাৎ ধ্বন্যাত্মক শব্দের আত্মা হল ধ্বনি বা আওয়াজ। বাংলা ভাষায় ধ্বন্যাত্মক শব্দের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অসাধারণ। প্রাথমিক ভাবে এই শব্দগুলিকে অব্যয় শ্রেণিভুক্ত করা হয়। বহু ব্যাকরণবিদ এদের 'ধ্বন্যাত্মক অব্যয়' নামেই চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা বিভিন্ন পদের ভূমিকা পালন করে। সে সব আলোচনায় যাওয়ার আগে আসুন জেনে নিই ধ্বন্যাত্মক শব্দ কাকে বলে। ধ্বন্যাত্মক শব্দের সংজ্ঞা যে সব শব্দ বাস্তব ধ্বনির অনুকরণে তৈরি হয়েছে, অথবা বাস্তব ধ্বনির মতো দ্যোতনা দিলেও আসলে কোনো বিশেষ ভাবকে প্রকাশ করে, তাদের ধ্বন্যাত্মক শব্দ বলে। নিচে উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বোঝানো হলো যেমন: 'ঝমঝম' এই কথাটি তৈরি হয়েছে বৃষ্টি পড়ার শব্দের অনুকরণে। বৃষ্টির শব্দ আমাদের কানে, দেহে, মনে যে শাব্দিক অনুভূতি জাগায়, সেই অনুভূতির‌ই বাঙ্ময় রূপ এই 'ঝমঝম' শব্দটি। আর এক ধরনের ধ্বন্যাত্মক শব্দ আছে, যার সাথে বাস্তব ধ্বনির কোনো যোগ নেই, তারা বিশেষ কোনো ভাব প্রকাশ করে। যেমন: খাঁ খাঁ, টনটন, কনকন, এই শব্দগুলির দ্বারা

বাংলা শব্দ | বাংলা শব্দ ভাণ্ডার

উৎস অনুযায়ী বাংলা শব্দের শ্রেণিবিভাগ বাংলা ভাষা পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ একটি ভাষা। একটি ভাষাকে আমরা তখন‌ই সমৃদ্ধ ভাষা বলবো, যখন সেই ভাষার শব্দভান্ডার হবে সমৃদ্ধ। পৃথিবীর যে কোনও সমৃদ্ধ ভাষার মতোই বাংলা ভাষার‌ও রয়েছে এক বিশাল শব্দভাণ্ডার। বাংলা ভাষার এই শব্দ-সম্পদ পুরোপুরি নিজস্ব নয়। নিজস্ব শব্দের পাশাপাশি বাংলা ভাষা তার চাহিদা পূরণ করার জন্য সংস্কৃত সহ আর‌‌ও নানান ভাষা থেকে শব্দ গ্রহণ করেছে। এই আলোচনায় আমরা বাংলা শব্দের উৎসগত শ্রেণিবিন্যাস করার পাশাপাশি প্রত্যেক প্রকার শব্দের বেশ কিছু উদাহরণ তালিকার আকারে তুলে ধরবো। তার আগে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তনের ইতিহাস। তাহলে বাংলা শব্দভাণ্ডারের বৈচিত্র্যময় উৎসটিকে বুঝে নিতে সুবিধা হবে। বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আনুমানিক দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীতে (৯০০খ্রি: -১১৯৯ খ্রি: সময়কাল) বাংলা ভাষার জন্ম হয়। একটা সময় ছিলো, যখন বঙ্গদেশে শুধুমাত্র প্রাচীন অস্ট্রিক ও দ্রাবিড় গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস ছিলো। আর্য জনজাতির মানুষ পরবর্তী সময়ে এই অঞ্চলে এসে বসবাস করতে শুরু করে। সেই সময় আর্যরা কথা বলতো প্রাকৃত ভাষায়।

কারকের ছড়া | কারক মনে রাখার সহজ উপায়

ছবি
ছড়ায় ছড়ায় কারক কারক নির্ণয়ের অনেক ছোটো-খাটো ছড়া বিভিন্ন সময়ে শুনেছি ও পড়েছি। কিন্তু কারকের সেই সব ছড়া খুব‌ই ছোটো ও অসম্পূর্ণ। তাই আমি নতুন করে একটি ছড়া লিখতে চেষ্টা করলাম। এই ভাবে ছড়ার মাধ্যমে কারকের সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়া সম্ভব নয়, তবু ২৮ পংক্তির এই ছড়াটি আশা করি কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারবে। যে করে ক্রিয়ার কাজ কর্তা বলি তারে এমনকি জড় বস্তু যদি  কাজ করে তথাপি বলিব কর্তা সন্দেহে না পড়ে। কর্তার বিভিন্ন ভাগ শেখো মনে করে। ক্রিয়ার কাজটি যাকে করেছে আশ্রয় অথবা ক্রিয়াতে করে যার ক্ষয় ব্যয়, 'কী' অথবা 'কাকে' প্রশ্নে উত্তর নির্ণয় তাহাকেই কর্ম বলি না হয় ব্যত্যয়। যার দ্বারা, যে উপায়ে, যার সহকারে যে লক্ষণে, যতক্ষণে কর্তা কাজ করে করণ তাহার‌ই নাম যেন মনে পড়ে। করণের নানা ভাগ, বলেছেন সুনীতিকুমারে। যার জন্য, যে উদ্দেশ্যে, কিংবা অভিপ্রায়ে ক্রিয়া সম্পাদিত, তায় নিমিত্ত বুলায়ে। (নিমিত্তের লেজে ধরি কেউ কেউ টানে তারা চায় ফিরাইতে মৃত সম্প্রদানে।) যেখান হ‌ইতে চ্যুত, জাত, কিংবা ভয়; যে কালে ক্রিয়ার কাজ সূত্রপাত হয় যা থেকে বদলে গিয়ে নব

উপধা কাকে বলে

 উপধা কী ধাতু বা শব্দের অন্ত্যবর্ণের পূর্ব বর্ণকে উপধা বলে। অন্ত্য বর্ণ মানে শেষ বর্ণ। অর্থাৎ ধাতু বা শব্দের (এক কথায় বললে প্রকৃতি) শেষ বর্ণটির আগে যে বর্ণ থাকে, তাকে উপধা বলে। প্রত্যয়ের আলোচনায় উপধা কাকে বলে তা জানা খুবই দরকার। কারণ প্রত্যয়ে এই উপধার বিশেষ ভূমিকা আছে। উপধায় কোন বর্ণ আছে, তার উপর অনেক সময় নির্ভর করে ধাতু বা শব্দের পর কোন প্রত্যয় বসবে। নিচে উদাহরণের সাহায্যে উপধা বিষয়টি বোঝানো হল। উপধার উদাহরণ  ১:  √যুজ্ একটি ধাতু। এই ধাতুটির বর্ণ বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাবে - য্ + উ + জ্ -- এখানে √যুজ্ ধাতুর উপধা হল উ বর্ণ। কারণ এখানে শেষ বর্ণ জ্ এবং তার আগের বর্ণ উ। এই কারণে উ হল এখানে উপধা। ২:  সুষ্ঠু একটি শব্দ। বর্ণ বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাবে - স্ + উ + ষ্ + ঠ্ + উ -- এখানে সুষ্ঠু শব্দটির উপধা হল ঠ্ বর্ণ। কৃৎ প্রত্যয় বিস্তারিত পড়ুন

অভিধা লক্ষণা ব্যঞ্জনা

 শব্দের তিন প্রকার অর্থ ভাষা একটি অত্যন্ত জটিল ব্যবস্থা। ভাষার একটি মূলগত উপাদান হল শব্দ। শব্দ হল অর্থের বাহক‌। কিন্তু শব্দের অর্থ সাধারণত সুনির্দিষ্ট হয় না। ক্ষেত্র বিশেষে ও প্রয়োগ-ভেদে এক‌ই শব্দ ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করতে পারে। যেমন "আমার মাথা ব্যথা করছে" বললে 'মাথা' ও 'ব্যথা' শব্দের যে অর্থ হয় "অন্যের সমস্যায় তোমার এত মাথা ব্যথা কিসের?" বললে 'মাথা' ও 'ব্যথা' শব্দের অর্থ তা হয় না। শব্দের অর্থ তিন প্রকার, বা অন্য ভাবে বলা যায় অর্থ প্রকাশের ব্যাপারে শব্দের তিনটি শক্তি -- অভিধা, লক্ষণা ও ব্যঞ্জনা। নিচে এই তিন প্রকার অর্থের ধারণা উদাহরণ সহ বোঝানো হল। অভিধা কাকে বলে অভিধা বলতে বোঝায় শব্দের আভিধানিক অর্থ বা একদম প্রাথমিক অর্থ। যেমন: 'গাছ' শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃক্ষ বা উদ্ভিদ। অভিধান খুললে 'গাছ' শব্দের এই অর্থটিই পাওয়া যাবে। তাই 'গাছ' শব্দের অভিধার্থ হল বৃক্ষ বা উদ্ভিদ। লক্ষণা কাকে বলে লক্ষণা হল সেই অর্থ, যাতে শব্দটির অভিধা অর্থ সম্পূর্ণ বদলে যায় না, কিন্তু সম্পূর্ণ এক‌ও থাকে না। যেমন: 'গ্রামের মর্যাদা&#

সমাসের প্রশ্নোত্তর | ব্যাসবাক্য সহ সমাস নির্ণ

 সমাস থেকে প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা: অনন্য পাঠক বেশ কিছু সমাসের ভুল উত্তর ইন্টারনেটের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে। এর ফলে একদিকে যেমন ছেলেমেয়েরা বিভ্রান্ত হচ্ছে, তেমনি তারা ভুল শিখছে। তাই সেই সব সমাসগুলি এবং সমাসের উপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আজকের এই পোস্টটি লিখলাম। আশা করি এটি ছাত্র-ছাত্রীদের কাজে লাগবে। ইউটিউবে সমাসের উপর আমার ক্লাসগুলি করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)।  ১: সপ্তাহ কোন সমাস?  উত্তর: সপ্ত অহের সমাহার -- দ্বিগু সমাস। ২: দম্পতি ব্যাসবাক্য সহ সমাস নির্ণয় করো। উত্তর: জায়া ও পতি -- দ্বন্দ্ব সমাস। ৩: গরমিল কোন সমাস? উত্তর: মিলের অভাব -- অব্যয়ীভাব সমাস। ৪: প্রত্যক্ষ সমাস উত্তর: অক্ষির সম্মুখে -- অব্যয়ীভাব সমাস। ৫: দুর্ভিক্ষ সমাস উত্তর: ভিক্ষার অভাব -- অব্যয়ীভাব সমাস। ৬: বেহায়া কোন সমাস ? উত্তর: নেই হায়া যার -- বহুব্রীহি সমাস। ৭: অনুচর সমাস উত্তর: অনু (পশ্চাৎ) চরে যে -- প্রাদি তৎপুরুষ সমাস। ৮: কাঁচকলা সমাস উত্তর: কাঁচা কলা -- নিত্য সমাস। (কাঁচা যে কলা -- এ রকম হয় না।) ৯: যথেষ্ট কোন সমাস? উত্তর: ইষ্টক

করণের বীপ্সা কাকে বলে

 করণের বীপ্সা বীপ্সা কথার অর্থ হল পৌনঃপুনিকতা বা পুনরুক্তি। এক‌ই কথাকে বার বার বললে তাকে বীপ্সা বলে। বাক্যের করণ কারকটি যদি পর পর দু বার ব্যবহৃত হয়, তবে তাকে করণের বীপ্সা বলা হয়। নিচে করণের বীপ্সার কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো।  উদাহরণ ১: কাজগুলো হাতে হাতে করে ফেলো। ২: মেঘে মেঘে আকাশ ভরে গেছে। ৩: ফুলে ফুলে বনানী পরিপূর্ণ হয়েছে। ৪: শোকে শোকে মানুষটা পাগল হয়ে গেছে। ৫: ভয়ে ভয়ে কথাটা কোনোদিন বলাই হলো না। ৬: আঘাতে আঘাতে বিদীর্ণ করে দিয়েছে। বিস্তারিত পড়ুন: কারক বিভক্তি ও অনুসর্গ ইউটিউবে আমার ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)

বাক্যাংশ কর্ম কাকে বলে

ছবি
 বাক্যাংশ কর্মের সংজ্ঞা ও উদাহরণ বাক্যাংশ কর্ম কাকে বলে, তা জানার আগে জেনে নেওয়া দরকার বাক্যাংশ আসলে কী। 'বাক্যাংশ' কথার আক্ষরিক অর্থ হল বাক্যের অংশ। কিন্তু এইটুকু জানলেই বাক্যাংশ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় না। বাক্যাংশ হল বাক্যের অন্তর্গত এমন পদগুচ্ছ, যার মধ্যে কোনো সমাপিকা ক্রিয়া থাকবে না, এবং পুরো পদগুচ্ছটি বাক্যের একটি পদ রূপে কাজ করবে। এক কথায় বলা যায়: সমাপিকা ক্রিয়াহীন যে পদগুচ্ছ বাক্যের মধ্যে একটি পদের কাজ করে, তাকে বাক্যাংশ বলে। এই ধরনের একটি বাক্যাংশ যখন বাক্যে কর্মের ভূমিকা পালন করে, তখন তাকে বলা হয় বাক্যাংশ কর্ম। নিচে উদাহরণের সাহায্যে বাক্যাংশ কর্মের পরিচয় দেওয়া হল। বাক্যাংশ কর্মের উদাহরণ "তোমার সারা দিন ঘুরে বেড়ানো আমি একদম পছন্দ করি না।" - এই বাক্যে 'তোমার সারা দিন ঘুরে বেড়ানো' অংশটির মধ্যে কোনো সমাপিকা ক্রিয়া নেই এবং এই পুরো অংশটিই কর্ম কারকের কাজ করছে। কী পছন্দ করি না? উত্তর: তোমার সারা দিন ঘুরে বেড়ানো।  আমি সকালবেলা পাখিদের গান গাওয়া উপভোগ করছি। -- 'পাখিদের গান গাওয়া' একটি বাক্যাংশ এবং এখানে তা কর্ম কারক। আমার ফিরে

সব্যয় পদ কাকে বলে

 সব্যয় পদ ব্যাকরণের কোনো কোনো লেখক অব্যয় পদের বিপরীতে সব্যয় পদের ধারণাটি দিতে চেয়েছেন। আমরা জানি অব্যয় বলতে বোঝায় যার ব্যয় বা পরিবর্তন নেই। অব্যয় পদগুলি রূপান্তরিত হয় না, অব্যয়ে বিভক্তি যুক্ত হয় না, কাল, পুরুষ, বচন ভেদেও অব্যয়ের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। কিন্তু অন্যান্য পদগুলি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রূপ বদলাতে পারে, তাই ওই পদগুলিকে সব্যয় পদ বলে। বিশেষ্য, সর্বনাম, বিশেষণ ও ক্রিয়া পদকে এই নামে অভিহিত করা হয়। কেননা এই পদগুলির পরিবর্তন ঘটে, এদের রূপ বদলায়‌। তবে এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলে দেওয়া প্রয়োজন যে, পাঁচ প্রকার পদকে অব্যয় ও সব্যয় এই দুই ভাগে ভাগ করার বিশেষ কোনও যৌক্তিক ভিত্তি নেই। তার একটি বড় কারণ এই যে বাংলা ভাষায় অব্যয়ের ধারণাটিও বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। অব্যয় পদগুলি সত্যিই কতটা অপরিবর্তনীয়, তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে। আশা করি বিষয়টি বোঝা গেছে। ইউটিউবে আমার ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)। আরও পড়ুন শব্দ ও পদের পার্থক্য   Best anti hairfall shampoo

স্বরযন্ত্রের কোন অংশ ধ্বনি তৈরিতে সরাসরি ভূমিকা পালন করে

 স্বরযন্ত্র ও ধ্বনি উৎপাদন বগ্‌যন্ত্রের অনেকগুলি অংশ রয়েছে। তার মধ্যে কতকগুলি অঙ্গ সক্রিয় ও কতকগুলি অঙ্গ নিষ্ক্রিয়। সক্রিয় অঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল জিহ্বা, অধর, ফুসফুস, আলজিভ, স্বরততন্ত্রী ও কণ্ঠের বিভিন্ন অস্থি। সম্প্রতি বাংলাদেশ বোর্ডের একটি প্রশ্ন নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্নটির উত্তর নিচে তুলে ধরা হলো। স্বরযন্ত্রের কোন অংশ ধ্বনি তৈরিতে সরাসরি অংশগ্রহণ করে? ক) বলয় উপাস্থি খ) মুখবিবর গ) নাসারন্ধ্র ঘ) নাসিকা এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় মুখবিবর, নাসারন্ধ্র বা নাসিকা, কোনোটিই বাগ্‌যন্ত্রের সক্রিয় অংশ নয়। এগুলিকে বরং বায়ু চলাচলের পথ বলা যায়। অবশ্য মুখবিবর নানা ভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে ধ্বনি তৈরিতে ভূমিকা গ্রহণ করে। তবু এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হবে বলয় উপাস্থি, যা কণ্ঠে অবস্থিত।  বাংলা ব্যাকরণের উপর আমার ইউটিউব ভিডিও দেখার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)।

মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ

মিল কাকে বলে ও মিল যুক্ত শব্দের তালিকা মিল বলতে বোঝায় উচ্চারণের সাদৃশ্য। যেমন জল শব্দের সঙ্গে মিল দেওয়া শব্দ হবে খল, বল, তল, সকল প্রভৃতি। সাধারণত দুটি শব্দের শেষে অবস্থিত দুটি বা তার বেশি সংখ্যক ধ্বনি এক বা প্রায় এক হলে ঐ দুটি শব্দের উচ্চারণগত সাদৃশ্যকে মিল বা অন্ত্যমিল বলে। বিষয়টা একটু ভেঙে বলি: ধরা যাক দুটি শব্দ 'বিপদ' আর 'সম্পদ'। এই দুটি শব্দের মধ্যে উচ্চারণগত সদৃশ অংশ হল 'পদ্' । পদ্ = প্+অ+দ্। তাহলে দেখা যাচ্ছে এই মিলটিতে তিনটি ধ্বনির সাদৃশ্য আছে। 'জল' ও 'খল' শব্দে মিল আছে দুটি ধ্বনির (অল্)। দুইয়ের কম ধ্বনির সাদৃশ্যকে মিল হিসেবে ধরা হয় না। নিচে আমরা বেশ কয়েকটি শব্দের মিল যুক্ত শব্দের উদাহরণ দিয়েছি। যেমন: মেঘ, গান, মাছ,  বাদল, ভাত , চাষ, নদী, ঘাস প্রভৃতি। বাংলা ব্যাকরণের যে কোন‌ও প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে কমেন্ট করুন । ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)। মিল যুক্ত বা অন্ত্য মিল দেওয়া শব্দ অনেক সময় আমাদের দরকার পড়ে। বিশেষ করে ছোটোদের ছড়ায় মিলের ব্যবহার খুবই বেশি। এই প

ক্রিয়াজাত অনুসর্গ | ক্রিয়াজাত অনুসর্গ কাকে বলে

 ক্রিয়াজাত অনুসর্গের ধারণা অনুসর্গ দুই প্রকার: শব্দজাত অনুসর্গ ও ক্রিয়াজাত অনুসর্গ। যে অনুসর্গগুলি কোনো শব্দ থেকে সৃষ্টি হয়েছে, তাদের বলে শব্দজাত বা নামজাত অনুসর্গ, এবং যে অনুসর্গগুলি কোনো ক্রিয়াপদ থেকে সৃষ্টি হয়েছে, তাদের বলে ক্রিয়াজাত অনুসর্গ। নিচে উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি ভালো ভাবে বোঝানো হলো। শব্দজাত অনুসর্গ ও ক্রিয়াজাত অনুসর্গের উদাহরণ শব্দজাত বা নামজাত অনুসর্গ হল: দ্বারা, কর্তৃক, অপেক্ষা, বিনা, পাশে, উপরে, নিচে, মধ্যে, সাথে প্রভৃতি। -- এই অনুসর্গগুলির মূলে বিভিন্ন শব্দ রয়েছে।  ক্রিয়াজাত অনুসর্গ হল: থেকে, দিয়ে, চেয়ে, হতে, করে প্রভৃতি। এই অনুসর্গগুলি আসলে অসমাপিকা ক্রিয়া, কিন্তু এরা অসমাপিকা ক্রিয়ার পাশাপাশি অনুসর্গ রূপেও ব্যবহৃত হয়। এদের মূলে একটি ধাতু থাকে। উপরের ক্রিয়াজাত অনুসর্গগুলিকে নিচে অসমাপিকা ক্রিয়া ও অনুসর্গ, এই দুই রূপেই ব্যবহার করে দেখাচ্ছি। অনুসর্গ রূপে ১: থেকে: কোথা থেকে এলে? ২: দিয়ে: চামচ দিয়ে খাবো। ৩: চেয়ে: তোমার চেয়ে আমি বড়ো। ৪: হতে: কোথা হতে সৃষ্টি হয়েছে? ৫: করে: ঘাড়ে করে ব‌ইতে হবে। অসমাপিকা ক্রিয়া রূপে ১: থেকে: আর কটা দিন থেকে যাও

সমাস | সমাস কাকে বলে

 সমাসের ধারণা নিজেদের মধ্যে অর্থের সম্পর্ক আছে, এমন একাধিক পদ একপদে পরিণত হলে সেই প্রক্রিয়াকে সমাস বলে। অর্থের সম্পর্ক না থাকলে যে কোনো দুটি পদে সমাস হবে না। 'সমাস' কথার আক্ষরিক অর্থ হল সংক্ষেপ।  সমাসে যে পদগুলি মিলিত হয়, তাদের বলে সমস্যমান পদ। যেমন: দশ আনন যাঁর = দশানন। এখানে 'দশ' ও 'আনন' পদদুটি সমস্যমান পদ। সমস্যমান পদগুলি মিলিত হয়ে যে পদ গঠন করে, তাকে বলে সমস্তপদ বা সমাসবদ্ধ পদ। উপরের উদাহরণে 'দশানন' সমাসবদ্ধ পদ। সমস্যমান পদগুলির অর্থ-সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয় যে বাক্যাংশের দ্বারা, তাকে ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য বলে। সমাসের শ্রেণিবিভাগ সমাসের প্রধান প্রধান ভাগগুলি নিচে উল্লেখ করা হল। প্রতিটি সমাস বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পড়ার জন্য যে কোনো সমাসে টাচ করুন।    দ্বন্দ্ব সমাস, তৎপুরুষ সমাস , কর্মধারয় সমাস , বহুব্রীহি সমাস , দ্বিগু সমাস, নিত্য সমাস, অব্যয়ীভাব সমাস ।  সমাস থেকে প্রশ্নোত্তর ১: সমাস ব্যাকরণের কোন শাখায় আলোচিত হয়? উত্তর: সমাস ব্যাকরণের রূপতত্ত্বে আলোচিত হয়। ২: সমাস শেখার প্রয়োজন কী? উত্তর: সমাস শেখা হয় শব্দের জন্মপরিচয় জান

করণ কারক কাকে বলে

 করণ কারক ক্রিয়া সম্পাদনের সহায়ক, হেতু, উপায় প্রভৃতিকে করণ কারক বলে। করণ কারকের অনেকগুলি ভাগ আছে। প্রতিটি ভাগের উদাহরণ নেওয়া হলে করণ কারক সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা গড়ে উঠতে পারে। নিচে প্রতিটি ভাগের উদাহরণ দেওয়া হলো‌। করণ কারকের শ্রেণিবিভাগ  ১: যন্ত্রাত্মক করণ চামচ দিয়ে খাই। হাত দিয়ে ধরেছি। দড়ি দিয়ে বেঁধেছি। ২: উপায়াত্মক করণ টাকায় কী না হয়! কৌশলে কাজ করো। ৩: হেতুবোধক করণ ছেলেটা ভয়ে কাঁদছে। লজ্জায় মাথা কাটা গেল। ৪: লক্ষণাত্মক করণ পৈতায় বামুন চেনা যায়। শিকারি বেড়াল গোঁফে চেনা যায়। ৫: সহকার অর্থে করণ সবজি দিয়ে ভাত খেয়েছি। ওষুধটা জল দিয়ে গিলে ফেলো। ৬: কালাত্মক করণ  ক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করতে যতটা সময় লাগে, সেই সময়কে কালাত্মক করণ বলে। এটি কালাধিকরণের থেকে আলাদা। যেমন: একদিনে ব‌ইটা শেষ করেছি। ঘণ্টায় দশটা ব্লাউজ সেলাই করে। করণ কারক সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে কারকের বিস্তারিত আলোচনা পড়ুন। 

আরবি শব্দের উদাহরণ

 আরবি শব্দ  আরবি ভাষা থেকে যে সব শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে, সেই শব্দগুলিকে আরবি শব্দ বলা হয়। নিচে আরবি শব্দের একগুচ্ছ উদাহরণ দেওয়া হলো। আক্কেল, আখের, আজব, আজান, আদাব, আদায়, আরজি, আল্লাহ, আসবাব, আসল, আসামি, আহাম্মক,  ইজ্জত, ইমারত, ইসলাম, ইস্তফা, ঈদ, উকিল, উসুল,  এলাকা, ওজন, কদর, কাজি, কাবাব, কায়দা, কায়েম,  কেচ্ছা, খারিজ, গজল, জরিমানা, জ্বালাতন, জেলা,  তবলা, তুলকালাম, দাবি, দৌলত, নকল, নগদ, ফকির,  বদল, বাকি, মজুদ, মেহনত, রদ, রায়, লায়েক, লোকসান,  শরিক, শহিদ, শুরু, সাফ, সাহেব, সুফি, হাকিম, হামলা, হাসিল, হিসাব, হুকুম, ইত্যাদি। বাংলা শব্দভাণ্ডার

উদ্দেশ্য ও বিধেয় সম্প্রসারক

ছবি
 উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্প্রসারক কাকে বলে বাক্য অধ্যায়ে উদ্দেশ্য ও বিধেয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। তবু এখানে আবার আলাদা করে উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্প্রসারক ব্যাপারটি আলোচনা করে দেওয়া দরকার বলে মনে হলো। আসুন জেনে নিই উদ্দেশ্য, বিধেয় ও তাদের সম্প্রসারক কাকে বলে। উদ্দেশ্য ও বিধেয় কাকে বলে বাক্যে যার সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য বলে এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে বাক্যে যা বলা হয়, তাকে বিধেয় বলে। যেমন: ছেলেরা খেলছে। -- এই বাক্যে 'ছেলেরা' উদ্দেশ্য, 'খেলছে' বিধেয়।  উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্প্রসারক উপরের উদাহরণে আমরা একটি ছোটো বাক্য নিয়েছি। কিন্তু সব বাক্য তো এত ছোটো হয় না। ঐ বাক্যটি এ রকম‌ও হতে পারে: "আমাদের পাড়ার ছোটো ছোটো ছেলেরা বিকেলবেলা গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলছে।" ভালো ভাবে লক্ষ করুন, প্রথম বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ দুটি এই বড় বাক্যেও আছে। তার পাশাপাশি অনেক বাড়তি পদ‌ও আছে। কতকগুলি বাড়তি পথ 'ছেলেরা' পদটিকে আর‌ও স্পষ্ট করে তুলেছে, আবার কতকগুলি পদ 'খেলছে' পদটিকে স্পষ্ট করে তুলেছে। নিচে দেখুন কোথাকার ছেলেরা? উঃ - আমাদের পাড়ার। কেমন

নির্মিতি কাকে বলে | নির্মিতি কথার অর্থ

 নির্মিতি বলতে কী বোঝায় 'নির্মিতি' কথাটির সাধারণ অর্থ হল নির্মাণ করা বা কিছু গড়ে তোলা। শিক্ষা, বিশেষত ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে নির্মিতি একটি বিশেষ ধরনের দক্ষতা। ব্যাকরণের পাশাপাশি আলাদা ভাবে নির্মিতির শিক্ষা দেওয়া হয়। নির্মিতি বলতে সাধারণ ভাবে বোঝায় কিছু লিখতে পারার দক্ষতা। বিস্তারিত ভাবে নির্মিতি বলতে পর পর কয়েকটি ধাপের দক্ষতাকে একসাথে বোঝানো হয়। সেই ধাপগুলি হল:  ১: ভাব অনুসারে শব্দ সাজিয়ে বাক্য নির্মাণ করা, ২: বাক্য সাজিয়ে অনুচ্ছেদ গঠন করা,  ৩: অনুচ্ছেদ সাজিয়ে চিঠিপত্র, প্রতিবেদন, প্রবন্ধ ইত্যাদি রচনা করা। নির্মিতির উচ্চতর ধাপে রয়েছে ভাব সম্প্রসারণ, ভাবার্থ, সারসংক্ষেপ লেখার ক্ষমতা ও ভাষান্তরিত করা বা অনুবাদ করার ক্ষমতা। মোটের উপর যে যে বিষয়গুলি নির্মিতির মধ্যে পড়ে, সেগুলি হল ১: বাক্য রচনা ২: বাগ্‌ধারা দিয়ে বাক্য রচনা ৩: অনুচ্ছেদ রচনা ৪: পত্র রচনা ৫: প্রতিবেদন রচনা ৬: প্রবন্ধ রচনা ৭: ভাব সম্প্রসারণ ৮: ভাবার্থ লিখন ৯: সারসংক্ষেপ রচনা ১০: অনুবাদ (যেমন: ই টু বি)

খাঁটি বাংলা উপপদ তৎপুরুষ সমাস

 বাংলা উপপদ তৎপুরুষ উপপদ তৎপুরুষ সমাসের ধারণাটি সংস্কৃত ভাষার ব্যাকরণ থেকে নেওয়া হয়েছে। উপপদের সঙ্গে আশ্রিত কৃদন্ত পদের সমাসকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে।  সংস্কৃত বা তৎসম উপপদ তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ: জলদ, বারিদ, পঙ্কজ, বরদা প্রভৃতি। কিন্তু এসবের বাইরে খাঁটি বাংলা উপপদ তৎপুরুষ সমাস‌ও কিছু কিছু রয়েছে। বিশেষ্য পদের সঙ্গে খাঁটি বাংলা কৃদন্ত পদের সমাসকে খাঁটি বাংলা উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে। নিচে কয়েকটি খাঁটি বাংলা উপপদ তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ দেওয়া হল। খাঁটি বাংলা উপপদ তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ যেমন: ছেলে ধরে যে = ছেলেধরা,  মাছি মারে যে = মাছিমারা,  ছা পোষে যে = ছা-পোষা,  পাড়ায় বেড়ায় যে = পাড়াবেড়ানি,  কান ভাঙে যে = কানভাঙানি প্রভৃতি।  উপপদ তৎপুরুষ সমাস সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন

রূপক কর্মধারয় সমাস কাকে বলে

 রূপক কর্মধারয় সমাস কর্মধারয় সমাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণি হল রূপক কর্মধারয়। আজ আলোচনা করবো রূপক কর্মধারয় সমাস কাকে বলে এবং রূপক কর্মধারয় সমাস চেনার উপায়। এই আলোচনাটি পড়ার পর রূপক কর্মধারয় সমাস সম্পর্কে আর কোন‌ও ধোঁয়াশা থাকবে না। তাহলে চলুন, প্রথমেই জেনে নিই রূপক কর্মধারয় সমাস কাকে বলে। যে কর্মধারয় সমাসে উপমান ও উপমেয়ের মধ্যে অভেদ কল্পিত হয়, তাকে রূপক কর্মধারয় সমাস বলে।  রূপক কর্মধারয় সমাসে কোন পদের অর্থ প্রাধান্য পায়? সমস্ত কর্মধারয় সমাসের মতো রূপক কর্মধারয়েও পরপদের অর্থ প্রাধান্য পায়। এক্ষেত্রে উপমানটি পরপদে থাকে, তাই উপমানের প্রাধান্য হয়। উদাহরণের মাধ্যমে রূপক কর্মধারয় সমাস আরও ভালো ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করছি। রূপক কর্মধারয় সমাসের উদাহরণ ১: জীবন রূপ নদী = জীবননদী -- একটু ভাবলেই বোঝা যাবে, এখানে জীবন ও নদীকে অভিন্ন মনে করা হচ্ছে। জীবনটাই যেন একটা নদী।  ২: প্রাণ রূপ পাখি = প্রাণপাখি -- (প্রাণটা যেন একটা পাখি। প্রাণ ও পাখির অভেদ কল্পিত হয়েছে।) ৩: মন রূপ মাঝি = মনমাঝি -- (মন যেন এক মাঝি।) ৪: জীবন রূপ তরী = জীবনতরী। ৫: ভব রূপ পারাবার = ভবপারাবার। রূপক কর্ম

সমস্যমান পদ কাকে বলে

 সমস্যমান পদ সমাস শিখতে হলে প্রথমেই শিখতে হবে সমাসের প্রতিটি পরিভাষা। সমাসের প্রধান পরিভাষাগুলি হল সমস্তপদ, সমস্যমান পদ, ব্যাসবাক্য, পূর্বপদ, পরপদ প্রভৃতি। এখানে আমরা জানবো সমস্যমান পদ কাকে বলে।  সমাসে যে পদগুলি মিলিত হয়, তাদের বলে সমস্যমান পদ। মনে রাখতে হবে, নিজেদের মধ্যে অর্থের সম্পর্ক না থাকলে তারা সমস্যমান পদ হতে পারবে না। নিচে উদাহরণের মাধ্যমে সমস্যমান পদ বিষয়টি বোঝানো হলো। সমস্যমান পদের উদাহরণ ১: নীল যে আকাশ = নীলাকাশ। -- এখানে সমস্যমান পদ দুটি হল 'নীল' ও 'আকাশ'। ২: রাজার পুত্র = রাজপুত্র। -- এখানে 'রাজার' ও 'পুত্র' হল সমস্যমান পদ। ৩: মীনের অক্ষির ন্যায় অক্ষি যার = মীনাক্ষি। -- এখানে 'মীনের' ও 'অক্ষি' পদদুটি সমস্যমান পদ।

বিদেশি অনুসর্গের উদাহরণ

 বিভিন্ন প্রকার অনুসর্গ অনুসর্গ হল এক ধরনের অব্যয়। এদের কাজ পদের সঙ্গে পদের সম্পর্ক স্থাপন করা। তাই এদের পদান্বয়ী অব্যয়‌ও বলা হয়। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অনুসর্গগুলিকে উৎস অনুসারে তিন ভাগে ভাগ করা হয়: তৎসম অনুসর্গ, বাংলা অনুসর্গ ও বিদেশি অনুসর্গ। নিচে আমরা তিন ধরনের অনুসর্গের‌ই উদাহরণ দেবো।  তিন প্রকার অনুসর্গের উদাহরণ ১: পড়াশোনা অপেক্ষা ভালো কাজ আর নেই।  ২: রাম কর্তৃক রাবণ নিহত হন।  ৩: তুমি বিনা আমি অসহায়।  ৪: কোথা থেকে আসছো? ৫: কে কার চেয়ে বড়ো? ৬: নাক বরাবর চলে যাও। ৭: পোশাক বাবদ ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। ৮: ভারত বনাম শ্রীলঙ্কার খেলা চলছে। উপরের উদাহরণগুলিতে লাল রঙে চিহ্নিত অনুসর্গগুলি বিদেশি, সবুজ রঙে চিহ্নিত অনুসর্গগুলি বাংলা এবং বেগুনি রঙে চিহ্নিত অনুসর্গগুলি তৎসম। 

উহ্য কর্ম কাকে বলে

ঊহ্য কর্ম ঊহ্য কথার অর্থ হল অনুল্লিখিত। সকর্মক ক্রিয়াগুলি কর্ম ছাড়া সম্পাদিত হতে পারে না। কিন্তু বাক্যে অনেক সময় দেখা যায় সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম বাক্যে উল্লিখিত হয় না। যেমন: "আমি খাচ্ছি।" এই বাক্যে কোনো কর্মের উল্লেখ নেই। অথচ খাবার জিনিস না থাকলে খাচ্ছি কী? এই বাক্যে আসলে কর্মটি ঊহ্য আছে। তাহলে ঊহ্য কর্মের সংজ্ঞা হিসেবে আমরা বলবো: সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম যদি বাক্যে উল্লিখিত না থাকে, তাহলে তাকে বলে ঊহ্য কর্ম। নিচে ঊহ্য কর্মের উদাহরণ দিলাম। মনে রাখতে হবে, ঊহ্য কর্মকে দেখতে পাওয়া যাবে না। ঊহ্য কর্ম নির্দিষ্ট হয় না, অনির্দিষ্ট হয়।  ঊহ্য কর্মের উদাহরণ ১: আমি পড়ছি। -- যা পড়ছি তা ঊহ্য কর্ম।  ২: আমি খাচ্ছি। -- যাই হোক কিছু খাচ্ছি। যা খাচ্ছি, সেটিই ঊহ্য কর্ম। ৩: আমি দেখলাম। -- যা দেখলাম, সেটি ঊহ্য কর্ম। ৪: আমি শুনছি। -- যা শুনছি তা ঊহ্য কর্ম। ৫: আমি দিলাম। -- যা দিলাম ও যাকে দিলাম, দুটিই ঊহ্য কর্ম। কারক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন

অনুসর্গের কাজ কী | অনুসর্গ কী কাজ করে

 অনুসর্গের কাজ অনুসর্গ হল এক ধরনের অব্যয়‌। অনুসর্গের অপর নাম কর্মপ্রবচনীয়, সম্বন্ধীয় বা পরসর্গ। এদের পদান্বয়ী অব্যয়‌ও বলা হয়। অনুসর্গের দুটি কাজ ১) অনুসর্গগুলি বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত হয়ে এক পদের সঙ্গে অন্য পদের সম্পর্ক স্থাপন করে। ২) অনুসর্গগুলি অনেক সময় কারকের বিভক্তি হিসেবেও কাজ করে।  নিচে উদাহরণের সাহায্যে অনুসর্গের কাজ দেখানো হলো। অনুসর্গ শব্দের ব্যুৎপত্তি অনুসর্গ শব্দের ব্যুৎপত্তি বা প্রত্যয় হল: অনু - √সৃজ্ + অ। অনু উপসর্গে পশ্চাৎ অর্থ বোঝায়, সৃজ্ ধাতুর অর্থ সৃজন করা বা সৃষ্টি করা।  অনুসর্গের উদাহরণ ১: নুন ছাড়া খাবার ভালো লাগে না। -- 'ছাড়া' অনুসর্গটি নুন ও খাবারের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করেছে।  ২: তোমার জন্য নতুন জামা এনেছি। -- এখানে 'জন্য' অনুসর্গটি কারকের বিভক্তি হিসেবে কাজ করছে। অনুসর্গের কাজ এই দুটিই। কখনও নাম পদের সঙ্গে নাম পদের সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং কখনও নাম পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সম্পর্ক গড়ে তোলা। অনুসর্গের অপর নাম কর্মপ্রবচনীয় কেন, তার প্রকৃত ব্যাখ্যা কারক অধ্যায়ে আলোচনা করেছি ‌।

সেরা বাংলা অভিধান

কোন বাংলা অভিধান কিনবো? বাংলা ভাষা সম্পর্কে যাঁদের বিন্দুমাত্র কৌতুহল আছে এবং শব্দের অর্থ, ব্যুৎপত্তি ইত্যাদির ব্যাপারে আগ্রহ আছে তাঁদের বাড়িতে একটি ভালো অভিধান রাখা খুবই জরুরি। বাংলা বিষয়ে যাঁরা উচ্চশিক্ষার পাঠ নিচ্ছেন, তাঁদের‌ কাছেও একটি ভালো অভিধান রাখার দরকার পড়ে। এমনকি স্রেফ বাড়িতে রাখার জন্য‌ও একটি অভিধান সংগ্রহ করা দরকার, কারণ অভিধানের প্রয়োজন অনেক সময়ই হয়ে থাকে। আজকাল অনেক অনলাইন অভিধান হয়েছে, অনেক অভিধানের অ্যাপ হয়েছে, কিন্তু সেগুলি যেমন পূর্ণাঙ্গ নয়, তেমনি অনেক ক্ষেত্রে ভুল‌ও রয়েছে। এক কথায় বলা যায়, বাংলায় এখনও পর্যন্ত এমন ই-ডিকশনারি বের হয়নি, যা কিনা কাগজের ডিকশনারির বিকল্প হতে পারে। তাই আজকের আলোচনায় আমি বলবো কোন অভিধান হাতের কাছে রাখলে শব্দের ব্যুৎপত্তি ও শব্দের বিভিন্ন ধরনের অর্থ দরকার মতো দেখে নেওয়া যাবে।  বঙ্গীয় শব্দকোষ হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরণায় শান্তিনিকেতন আশ্রমের সংস্কৃত ভাষার শিক্ষক হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর জীবনের সুদীর্ঘ চল্লিশ বছরের সাধনায় রচনা করেন বাংলা ভাষার প্রথম পূর্ণাঙ্গ অভিধান। এই ব‌ইকে বাংলা শব্দভাণ্

উপবাক্যীয় কর্তা কাকে বলে

 উপবাক্যীয় কর্তা উপবাক্যীয় কর্তা কাকে বলে তা জানার আগে আসুন জেনে নিই উপবাক্য কাকে বলে। উপবাক্য হল এমন এক পদগুচ্ছ, যার মধ্যে নিজের উদ্দেশ্য ও বিধেয় আছে, কিন্তু নিজে স্বাধীন বাক্য নয়, বরং একটি জটিল বাক্যের অংশ হিসেবে কাজ করে। উপবাক্যের অপর নাম খণ্ডবাক্য। একটি উপবাক্য যখন বাক্যের কর্তা হিসেবে কাজ করে, তখন তাকে বলা হয় উপবাক্যীয় কর্তা। নিচে উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করা হলো। উপবাক্যীয় কর্তার উদাহরণ ১: একখানি গাড়ি কিনবো আমার ইচ্ছা। -- কোনটি হয় আমার ইচ্ছা? "একখানি গাড়ি কিনবো" -- এই পুরো উপবাক্যটি কর্তার কাজ করছে। ২: "সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা" ছিলো তাঁর আদর্শ। -- "সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা" -- এটি একটি উপবাক্য এবং এটি বাক্যের কর্তা হিসেবে আছে।  ৩: "ব‌ই পড়লে জ্ঞান বাড়ে" কার‌ও অজ্ঞাত কথা নয়। -- চিহ্নিত অংশটি উপবাক্যীয় কর্তা। আশা করি বিষয়টি বোঝাতে পেরেছি। ইউটিউবে আমার ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak) কারকের বিস্তারিত আলোচনা পড়ুন

তির্যক বিভক্তি কাকে বলে

 তির্যক বিভক্তি বাংলা ভাষায় সংস্কৃতের মতো নির্দিষ্ট কারকে নির্দিষ্ট বিভক্তি-চিহ্ন হয় না। বাংলা কারকে প্রায় সব বিভক্তিই একাধিক কারকে ব্যবহৃত হতে পারে। যে বিভক্তি একাধিক কারকে ব্যবহৃত হয়, তাকেই তির্যক বিভক্তি বলে । নিচে উদাহরণের সাহায্যে তির্যক বিভক্তি কাকে বলে, তা ভালো ভাবে বিশ্লেষণ করা হলো। তির্যক বিভক্তির উদাহরণ বুলবুলিতে ধান খেয়েছে। - কর্তৃ কারকে 'তে' বিভক্তি। এ ছুরিতে মাংস কাটা যাবে না। - করণে 'তে' বিভক্তি। ঘরেতে ভ্রমর এলো। -- অধিকরণ কারকে 'তে' বিভক্তি। উপরের উদাহরণগুলিতে দেখা যাচ্ছে 'তে' বিভক্তি একাধিক কারকে ব্যবহৃত হচ্ছে। সুতরাং বলা যায় 'তে' বিভক্তিটি তির্যক বিভক্তি। বাংলা ব্যাকরণের প্রায় সব যথার্থ বিভক্তিই তির্যক বিভক্তি। তবে অধিকাংশ অনুসর্গ তির্যক নয়।  ইউটিউবে আমার ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)। কিছু জানার থাকলে যে কোনো ভিডিওতে কমেন্ট করে জানান। কারক বিভক্তি ও অনুসর্গ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন

সাধন কর্তা কাকে বলে

 সাধন কর্তা সাধন কথাটির অর্থ হল উপকরণ। করণ কারক অনেক সময় বাক্যের কর্তা হিসেবে কাজ করে। এইভাবে করণ বা সাধন যদি কর্তা হিসেবে কাজ করে, তখন সেই কর্তাকে সাধন কর্তা বলে। মনে রাখতে হবে সাধন কর্তা আসলে করণ হলেও বাক্যের মধ্যে কর্তার কাজ করে, তাই কর্তৃ কারক‌ই হবে। নিচে উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করতে চেষ্টা করছি।  সাধন কর্তার উদাহরণ ১: ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। -- এই উদাহরণে ঢেঁকি সাধন কর্তা। কারণ ঢেঁকি আসলে করণ। ঢেঁকি নিজে ধান ভানে না, ঢেঁকির সাহায্যে মানুষ ধান ভানে। কিন্তু এই বাক্যে মনে হচ্ছে ঢেঁকি নিজেই ধান ভানে।  ২: লাল টিপটা তোমাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। -- টিপটা এখানে সাধন কর্তা। টিপের সাহায্যে সৌন্দর্য বেড়েছে‌। সৌন্দর্য বাড়াতে টিপকে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এই বাক্যে টিপ কর্তার জায়গায় আছে। ৩: আশি সালের সাইকেলটা আজ‌ও আমাকে ব‌ইছে। - সাইকেলটা এখানে সাধন কর্তা। কারণ সাইকেল আসলে করণ হয়েও এই বাক্যে কর্তার ভূমিকা পালন করছে। ৪: এই ছোট্ট ছুরিটা ফল কাটতে পারবে, মাংস কাটতে পারবে না। -- এখানে ছুরিটা সাধন কর্তা।

কমপিটেন্স কাকে বলে | What is competence in language study

 কম্পিটেন্স বা পারঙ্গমতাবোধ নোয়াম চমস্কির বিশ্বজনীন ব্যাকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা হল কম্পিটেন্স বা পারঙ্গমতাবোধ। চমস্কির তত্ত্ব অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির জ্ঞানের মধ্যে তার মাতৃভাষা ব্যবহার ও তার পদ্ধতি সম্পর্কে যে ধারণা থাকে, তাকে কম্পিটেন্স বা পারঙ্গমতাবোধ বলে। সোস্যুরের লাঙ ও পারোল-এর লাঙ এবং চমস্কির কম্পিটেন্স এক নয়। লাঙ হল একটি জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক ভাষাবোধ, চমস্কির কম্পিটেন্স হল ব্যক্তির মধ্যে স্বাভাবিক ভাবে অর্জিত ভাষাবিষয়ক পারঙ্গমতা বা বিভিন্ন ক্ষমতা।  চমস্কির মতে পারঙ্গমতা দুই ধরনের: ১: Grammatical বা ব্যাকরণগত ও ২: Pragmatic বা প্রয়োগগত। ভাষার ব্যাকরণ সম্পর্কে অন্তর্নিহিত বোধ, বাক্য, শব্দ, শব্দার্থ প্রভৃতি সম্পর্কে সাধারণ যে ধারণা বা জ্ঞান মানুষের মনে থাকে, সেগুলি সব‌ই ব্যাকরণগত কম্পিটেন্সের মধ্যে পড়ে। অন্য দিকে ভাষাকে প্রয়োগ করা সম্পর্কে যে সব ক্ষমতা, যেমন পড়তে পারা, বর্ণনা দিতে পারা, তথ্য সুবিন্যস্ত করার ক্ষমতা, সাহিত্য রচনা করতে ও বুঝতে পারার ক্ষমতা, সেগুলি প্রয়োগগত কম্পিটেন্সের মধ্যে পড়ে।

বাক্যাংশ কর্তা কাকে বলে

 বাক্যাংশ কর্তা বাক্যাংশ কর্তা কাকে বলে, তা জানার আগে আমাদের জেনে নিতে হবে বাক্যাংশ কী। বাক্যাংশ হল এমন এক পদগুচ্ছ, যার মধ্যে সমাপিকা ক্রিয়া থাকবে না, এবং পুরো পদগুচ্ছটি বাক্যের মধ্যে একটি পদের কাজ করবে। বাক্যাংশকে ইংরেজিতে phrase বলে। তো, এই বাক্যাংশগুলি বাক্যের মধ্যে বিভিন্ন কারকের ভূমিকা পালন করতে পারে। কোনো বাক্যাংশ যদি বাক্যের মধ্যে কর্তার ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেই কর্তাকে বলে বাক্যাংশ কর্তা। নিচে উদাহরণের মাধ্যমে বাক্যাংশ কর্তা সম্পর্কে ধারণাটি স্পষ্ট করা হলো। বাক্যাংশ কর্তার উদাহরণ ১: তোমার অমন করে চলে যাওয়া আমাকে খুব‌ই দুঃখ দিয়েছে। -- এই বাক্যে কর্তা কে? দুঃখ কে দিয়েছে? -- 'তোমার অমন করে চলে যাওয়া'। এই পুরোটার মধ্যে কিন্তু কোনো সমাপিকা ক্রিয়া নেই, অথচ এটি একটি পদগুচ্ছ এবং বাক্যের মধ্যে একটি পদের কাজ করছে। তাই এটি একটি বাক্যাংশ কর্তা। ২: রাতুলের অসাধারণ খেলা আমাদের দলকে জয়ী করেছে। -- 'রাতুলের অসাধারণ খেলা' এই বাক্যের বাক্যাংশ কর্তা। ৩: একটু একটু করে টাকা সঞ্চয় করার অভ্যেসটাই আমাকে বিপদের সময় বাঁচিয়ে দিলো। -- 'একটু একটু করে টাকা সঞ্চয় করার অ

ণিজন্ত ধাতু কাকে বলে

 ণিজন্ত ধাতুর ধারণা ও উদাহরণ ণিজন্ত কথাটির অর্থ হল 'ণিচ্ অন্তে যার'। সন্ধি ভাঙলে হবে ণিচ্ + অন্ত। অর্থাৎ যার শেষে ণিচ্ প্রত্যয় আছে। ণিচ্ প্রত্যয়টি একটি সংস্কৃত প্রত্যয়। সংস্কৃত ভাষায় এর কাজ হল মৌলিক ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রযোজক ধাতু তৈরি করা ( বাংলা ভাষায় এই কাজটি করে আ প্রত্যয়‌। এই বিষয়টি জানার জন্য আমার লেখা ধাতু অধ্যায়টি পড়ে নিন।)। এই কারণে সংস্কৃত ভাষায় প্রযোজক ধাতুকে ণিজন্ত ধাতু বলা হয়। যেমন- সংস্কৃত ণিজন্ত ধাতুর উদাহরণ: √শিক্ষ্ + ণিচ্ = √শিক্ষি। √শিক্ষি ধাতুটি একটি ণিজন্ত ধাতু। সংস্কৃত ভাষার অনুকরণে বাংলাতেও প্রযোজক ধাতুকে ণিজন্ত ধাতু নাম দেওয়া হয়েছে। যদিও আমাদের মনে হয় বাংলাতে এই ধরনের নামকরণের কোনো কারণ নেই। কেননা বাংলাতে ণিচ্ প্রত্যয় নেই। বাংলা প্রযোজক ধাতুর গঠনে ণিচ্ প্রত্যয় ব্যবহৃত হয় না।  ণিজন্ত ধাতুর উদাহরণ বাংলা ণিজন্ত ধাতুর উদাহরণ চাইলে প্রযোজক ধাতুর উদাহরণ দিতে হবে। যেমন:  √কর্ + আ = √করা √দেখ্ + আ = √দেখা √খা + আ = √খাওয়া  √করা, √দেখা, √খাওয়া প্রভৃতি হল বাংলা ব্যাকরণের প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতুর উদাহরণ। আশা করি বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। ই

ধাতু বিভক্তির উদাহরণ

 ধাতু-বিভক্তি বা ক্রিয়া-বিভক্তি কাকে বলে  যে বিভক্তিগুলি ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ধাতুকে ক্রিয়াপদে পরিণত করে, তাদের ধাতু-বিভক্তি বলে। ধাতু বিভক্তির আরেক নাম ক্রিয়াবিভক্তি। ক্রিয়াবিভক্তির শ্রেণিবিভাগ বিভক্তির বিস্তারিত আলোচনা বিষয়ক পোস্টে লিখেছি। তাই এখানে তা আর আলাদা করে লিখছি না। ধাতু-বিভক্তি বা ক্রিয়া-বিভক্তির উদাহরণ দেওয়ার জন্য এখানে কয়েকটি ক্রিয়াপদকে ভেঙে তারপর বিভক্তিগুলি চিহ্নিত করবো। এখানে ক্রিয়াপদের সাধু রূপ ব্যবহার করতে হবে। কারণ চলিত ভাষায় ক্রিয়াবিভক্তি চিহ্নিত করতে গেলে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হবে না, কারণ চলিতে অনেক সময় এদের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহৃত হয়। নিচের উদাহরণগুলি লক্ষ করুন। ধাতু-বিভক্তির উদাহরণ করি = √কর্ + ই করিতেছিলাম = কর্+ইতে+আছ্+ ইল্+আম বলিয়াছিলাম = বল্+ইয়া+আছ্+ ইল্+আম বলিয়াছিলে = বল্+ইয়া+আছ্+ ইল্+এ দেখিতেছি = দেখ্+ইতে+আছ্ +ই দেখিতেছিস = দেখ্+ইতে+আছ্ +ইস করিতে থাকিব = কর্+ইতে+থাক্+ ইব্+অ দেখিতে থাকিবেন = দেখ্+ইতে+থাক্+ ইব্+এন উপরের উদাহরণগুলিতে লাল রঙে লেখা অংশগুলি ধাতু-বিভক্তি বা ক্রিয়া-বিভক্তির উদাহরণ। ইউটিউবে আমার ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে

পিজিন কাকে বলে

 পিজিন ভাষা  একে অপরের ভাষা জানে না, এমন দুটি জাতি কাছাকাছি বসবাস করার কারণেই হোক বা অন্য কোনো কারণেই হোক, নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতে বাধ্য হলে সাধারণত তৃতীয় একটি ভাষার সাহায্য নেয়। কিন্তু তেমন কোনো উপযুক্ত তৃতীয় ভাষাও যদি না থাকে, তাহলেও দুই জাতির কথোপকথন আটকে থাকে না। এ রকম পরিস্থিতিতে দুই জাতির মধ্যে এক ধরনের কাজ চালানো গোছের ভাষা গড়ে ওঠে। সে ভাষায় উভয় ভাষা থেকেই কিছু কিছু শব্দ নেওয়া হয় এবং অন্যান্য ভাষা থেকেও শব্দ নেওয়া হয়। এই ধরনের ভাষাকে পিজিন বলে। নিচে পিজিনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো। পিজিনের বৈশিষ্ট্য পিজিনের শব্দ সংখ্যা কম হয়, ব্যাকরণ‌ও বিশেষ থাকে না। অনেক বিষয়কে অঙ্গভঙ্গির সাহায্যেও বোঝানো হয়। পিজিন কোনো জাতির মাতৃভাষা বা প্রথম ভাষা হিসেবে গণ্য হয় না। পিজিনকে পূর্ণাঙ্গ ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কোনো পিজিন যদি অনেক দিন ব্যবহারের পর কোনো জাতির বা কোনো অঞ্চলের অধিবাসীদের প্রথম ভাষায় পরিণত হয়, তাহলে তখন ঐ ভাষাকে আর পিজিন বলা হয় না। তখন তাকে ক্রেওল বলা হয়। ইংরেজি 'বিজনেস' শব্দের চিনা উচ্চারণ 'পিজিন'। সেই থেকে এই নামটি গ্রহণ করা

অন্ত্য ব্যঞ্জন লোপ

অন্ত্য ব্যঞ্জন লোপ কাকে বলে ধ্বনি পরিবর্তনকে মূলত চারটি ভাগে ভাগ করা হয় ১: ধ্বনির আগম ২: ধ্বনির লোপ ৩: ধ্বনির রূপান্তর ৪: ধ্বনির বিপর্যাস ধ্বনির লোপ পর্যায়ের অন্তর্গত একটি বিশেষ ধারা হল অন্ত্য ব্যঞ্জন লোপ। শব্দের শেষ দলে অবস্থিত ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণে লুপ্ত হলে তাকে বলা হয় অন্ত্য-ব্যঞ্জন লোপ।  নিচে উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করা হলো। উদাহরণ সখী > স‌ই -- এখানে শব্দের শেষ দলে অবস্থিত ব্যঞ্জন খ্ লোপ পেয়েছে। এক‌ই রকম আরও উদাহরণ: শিয়ালদহ > শেয়ালদা, খড়দহ > খড়দা, চাকদহ > চাকদা, বধূ > ব‌উ, মধু > ম‌উ প্রভৃতি। এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলে দেওয়া উচিত। আমাদের মতে বাংলায় প্রকৃত পক্ষে অন্ত্য ব্যঞ্জন লোপের ঘটনা ঘটে না। উপরের উদাহরণগুলি লক্ষ করলে দেখা যাবে লুপ্ত ব্যঞ্জনগুলি আদতে শব্দের শেষে নেই। যেমন: সখী শব্দের শেষে স্বর আছে, তাহলে শেষে ব্যঞ্জন থাকার প্রশ্ন আসছে কী ভাবে? তবু এই উদাহরণগুলো বিভিন্ন লেখক অন্ত্য ব্যঞ্জন লোপের উদাহরণ হিসেবে দেখিয়েছেন। তাই সংজ্ঞাটি আমরা একটু বদল করে 'দল' কথাটি যুক্ত করেছি। 

অ-তৎসম শব্দ কাকে বলে

অ-তৎসম শব্দ বাংলা শব্দভাণ্ডারে তৎসম শব্দ ও অ-তৎসম শব্দ কথা দুটি প্রায়শ‌ই বিভিন্ন প্রসঙ্গে শোনা যায়। আজকের আলোচনায় আসুন আমরা জেনে নিই অ-তৎসম শব্দ কী এবং বাংলা ভাষায় অ-তৎসম শব্দের গুরুত্ব কোথায়। তৎসম শব্দ বলতে বোঝায় সংস্কৃত শব্দভাণ্ডার থেকে সরাসরি বাংলা ভাষায় গৃহীত শব্দ। সংখ্যার বিচারে তৎসম শব্দগুলি বাংলা শব্দভাণ্ডারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রেণি। বাংলা শব্দভাণ্ডারে তৎসম শব্দ ছাড়াও রয়েছে তদ্ভব, অর্ধতৎসম, দেশি, বিদেশি, প্রাদেশিক ও সংকর শব্দ। এই সব ধরনের শব্দগুলিকে একত্রে অ-তৎসম শব্দের পর্যায়ে ফেলা হয়। নিচে বাংলা শব্দভাণ্ডারে অ-তৎসম শব্দের গুরুত্ব আলোচনা করলাম।  অ-তৎসম শব্দের গুরুত্ব অ-তৎসম শব্দগুলি বাংলা ভাষায় বিশেষ একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলার নিজস্ব বানানবিধি প্রায় সম্পূর্ণ রূপে মেনে চলা যায় অ-তৎসম শব্দের ক্ষেত্রেই। তৎসম শব্দের বানানে সংস্কৃত বানান বিধি না মেনে উপায় থাকে না। কারণ সংস্কৃত বানান না মানলে তৎসম শব্দের ব্যুৎপত্তি ব্যাখ্যা করা কঠিন হয়ে উঠবে এবং নানা রকম জটিলতা দেখা দেবে। অ-তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা নেই। এই শব্দগুলির সঠিক বাংলা উচ্চারণ অনুযায়ী

গৌণ কর্ম কাকে বলে | মুখ্য কর্ম কাকে বলে

 গৌণ কর্ম ও মুখ্য কর্ম গৌণ ও মুখ্য কর্ম সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত কর্ম কাকে বলে। কর্ম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে গৌণ কর্ম ও মুখ্য কর্ম বুঝতে অসুবিধা হবে।  কর্ম কাকে বলে কর্ম হল ক্রিয়ার আশ্রয়। ক্রিয়ার কাজটি যার উপর প্রয়োগ করা হয়, তাকেই কর্ম বলে। যেমন: "বাঙালিরা ভাত খায়।" - এই বাক্যে খাওয়ার কাজটি ভাতের উপরেই প্রযুক্ত হচ্ছে। ভাতকেই তো খাওয়া হয়‌। সাধারণ ভাবে ক্রিয়াকে 'কী' বা 'কাকে' দিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্ম পাওয়া যায়। এ বার আসি মুখ্য ও গৌণ কর্ম প্রসঙ্গে। মুখ্য ও গৌণের ধারণাটি অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। আমি সেটিই স্পষ্ট করার চেষ্টা করবো।  গৌণ ও মুখ্য কর্ম একটি ক্রিয়ার যদি দুটি কর্ম থাকে এবং তার মধ্যে একটি প্রাণীবাচক ও অপরটি জড়বাচক হয়, তাহলে জড়বাচক কর্মটি মুখ্য ও প্রাণীবাচক কর্মটি গৌণ হয়। এখন প্রশ্ন হবে প্রাণীবাচকটি গৌণ কেন? প্রাণী তো মুখ্য হ‌ওয়া উচিত। জড় পদার্থের চেয়ে প্রাণীর গুরুত্ব সবসময়ই বেশি। এখানে বুঝতে হবে, মুখ্যতা বা গৌণতা ভাবের বিচারে ঠিক করা হয় না। এখানে মুখ্যতা ও গৌণতা স্থির করা হয় ক্রিয়ার সাথে সম