অভিধা লক্ষণা ব্যঞ্জনা

 শব্দের তিন প্রকার অর্থ

ভাষা একটি অত্যন্ত জটিল ব্যবস্থা। ভাষার একটি মূলগত উপাদান হল শব্দ। শব্দ হল অর্থের বাহক‌। কিন্তু শব্দের অর্থ সাধারণত সুনির্দিষ্ট হয় না। ক্ষেত্র বিশেষে ও প্রয়োগ-ভেদে এক‌ই শব্দ ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করতে পারে। যেমন "আমার মাথা ব্যথা করছে" বললে 'মাথা' ও 'ব্যথা' শব্দের যে অর্থ হয় "অন্যের সমস্যায় তোমার এত মাথা ব্যথা কিসের?" বললে 'মাথা' ও 'ব্যথা' শব্দের অর্থ তা হয় না। শব্দের অর্থ তিন প্রকার, বা অন্য ভাবে বলা যায় অর্থ প্রকাশের ব্যাপারে শব্দের তিনটি শক্তি -- অভিধা, লক্ষণা ও ব্যঞ্জনা। নিচে এই তিন প্রকার অর্থের ধারণা উদাহরণ সহ বোঝানো হল।

অভিধা কাকে বলে

অভিধা বলতে বোঝায় শব্দের আভিধানিক অর্থ বা একদম প্রাথমিক অর্থ। যেমন: 'গাছ' শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃক্ষ বা উদ্ভিদ। অভিধান খুললে 'গাছ' শব্দের এই অর্থটিই পাওয়া যাবে। তাই 'গাছ' শব্দের অভিধার্থ হল বৃক্ষ বা উদ্ভিদ।

লক্ষণা কাকে বলে

লক্ষণা হল সেই অর্থ, যাতে শব্দটির অভিধা অর্থ সম্পূর্ণ বদলে যায় না, কিন্তু সম্পূর্ণ এক‌ও থাকে না। যেমন: 'গ্রামের মর্যাদা' বললে গ্রামবাসীদের মর্যাদা বোঝায়। গ্রাম তো জড় বস্তু, তার মর্যাদা থাকতে পারে না। 'মাটির মানুষ' বললে মাটির মতো বিনীত বা মাটির কাছাকাছি বসবাস করা মানুষকে বোঝায়। সত্যি সত্যি মাটির তৈরি মানুষ বোঝায় না।

ব্যঞ্জনা কাকে বলে

ব্যঞ্জনা হল শব্দের সবচেয়ে সূক্ষ্ম অর্থ। শব্দ যখন নিজের মূল অর্থ থেকে বিচ্যুত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন অর্থ প্রকাশ করে, তখন সেই অর্থকে বলে ব্যঞ্জনা। যেমন: 'টাকার গাছ' বললে কোনো গাছের কথা বলা হয় না, এমন একজন ধনী ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যার কাছে চাইলেই টাকা পাওয়া যায়। 

আশা করি বিষয়টি বোঝাতে পেরেছি। ইউটিউবে আমার ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)।

আরও দেখুন

মন্তব্যসমূহ

আর‌ও পড়ে দেখুন

মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ

সূচিপত্র | Bengali Grammar

কারক ও বিভক্তি এবং অনুসর্গ: বিস্তারিত আলোচনা | কারক

সাধু ও চলিত ভাষার ৭টি বৈশিষ্ট্য ও রূপান্তর | Sadhu o cholit bhasha

তৎসম শব্দ কাকে বলে | তৎসম শব্দের তালিকা

বর্ণ বিশ্লেষণ করার নিয়ম | Barna bislesan Bengali

বিবৃতিমূলক বাক্য কত প্রকার | নির্দেশক বাক্য কত প্রকার

সন্ধি এবং স্বরসন্ধির সূত্র, উদাহরণ ও ব‍্যতিক্রম