বাচ্য চেনার উপায় | Bachyo chenar niyom
■ বাচ্য চেনার কৌশল
বাচ্য চেনার ব্যাপারে অনেক ছাত্রছাত্রী সমস্যায় পড়ছে। আমার ব্লগে বাচ্য নিয়ে আলোচনা করব যথা সময়ে। কিন্তু তার এখনও দেরি আছে। আজ ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাচ্য চেনার ১১টি সংক্ষিপ্ত অথচ কার্যকর কৌশল বলছি। বাচ্যের বিস্তারিত আলোচনা করেছি, তার লিংকও নিচে দিলাম।
১: ক্রিয়াপদ যদি কর্তার পুরুষ ধরে হয়, তাহলে অবশ্যই কর্তৃবাচ্য হবে। মনে রাখবে, জড় পদার্থও কর্তা হতে পারে। যেমন : সূর্য ওঠে।
২: এককর্মক ক্রিয়ার কর্মে যদি 'কে' বিভক্তি থাকে, তাহলে জানবে সেটি কোনোমতেই কর্মবাচ্য বা কর্মকর্তৃবাচ্য হবে না। কারণ ওই দুটি বাচ্যে কর্মকে কর্তা সাজতে হয় আর কর্তা সাজতে হলে কর্মে শূন্য বিভক্তি দিতে হয়।
যেমন: লোকটি প্রহৃত হল। টাকাকড়ি অপহৃত হয়েছে। বইটি আমার দ্বারা পড়া হয়েছে।
৩: প্রকৃত কর্তায় দ্বারা/কর্তৃক/দিয়ে অনুসর্গ থাকলে সেটি কর্মবাচ্য হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
যেমন: কমিটি কর্তৃক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। - কমিটি এখানে আসল কর্তা।
৪: মূল ক্রিয়াটিকে যদি ত/ইত প্রত্যয় যোগে বিশেষণে পরিণত করা হয়, (যেমন: পঠিত, ভুক্ত, গৃহীত, বর্জিত, পরিত্যক্ত ইত্যাদি) তাহলে সেটি প্রায় সব সময়ই কর্মবাচ্য। যেমন : স্থানটি পরিত্যক্ত হয়েছে।
তবে যদি ২ আর ৪ এর বিরল সংযোগ ঘটে, সেক্ষেত্রে ভাববাচ্য হবার সম্ভাবনা প্রবল। এমন হলে কর্মটি প্রাণিবাচক হবে।
যেমন : "তোমাকে সত্যি সত্যি প্রহৃত হতে হল?" এখানে একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে--- কর্মবাচ্যের কর্তারূপী কর্মকে সত্যিকার কর্তার মর্যাদা দিয়ে গৌণকর্ম-কর্তা ভাববাচ্য তৈরি করা হচ্ছে । *বাচ্যের বিস্তারিত আলোচনা দ্রষ্টব্য।
৫: কর্মকর্তৃবাচ্যে কখনও প্রকৃত কর্তার উল্লেখ থাকে না। কর্মটিই কর্তার কাজ করে।
৬: ক্রিয়া অকর্মক হলে স্বাভাবিক ভাবেই তার কর্মবাচ্য সম্ভব নয়। তাতে কর্তায় দ্বারা/দিয়া যাই থাক।
ADVERTISEMENT
৭: কর্মটি ক্রিয়ার ভাব-জাত বিশেষ্যের সাথে হাইফেন দিয়ে জুড়ে দেওয়া থাকলে সেটি অবশ্যই ভাববাচ্য। যেমন : "আমার ভাত-খাওয়া শেষ হ'ল।"
৮: এছাড়া, ভাববাচ্যে কর্তায় কে/র-এর বিভক্তি থাকবে অথবা কর্তা থাকবে না।
৯: ভাববাচ্যে হ ধাতু আছে দেখেই সহসা ভাববাচ্য ধরতে নেই। কর্মবাচ্যেও হ ধাতুজাত ক্রিয়া লাগে।
১০: সমাপিকা ক্রিয়ার আগে 'ইতে' প্রত্যয়যুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়া থাকলে এবং সমাপিকা ক্রিয়াটি হ ধাতু-জাত হলে ভাববাচ্য হবে।
যেমন: আমাকে যেতে হবে।(যাইতে হইবে)
১১: কর্তা ও কর্ম চিনতে পারলে বাক্যের কর্তা ও কর্ম পরিবর্তন করে বাচ্য চেনা যায়।
ক) কর্তা বদলে তার জায়গায় 'আমি' বা 'তুমি' বসাতে হবে। যদি ক্রিয়াটি কর্তা অনুসারে বদলে যায়, তবে কর্তৃবাচ্য।
যেমন: ছেলেরা খেলছে। আমি খেলছি। ছেলেরা পাল্টে 'আমি' করে দিতেই ক্রিয়া বদলে 'খেলছি' হল।
খ) কর্ম বদলে তার জায়গায় 'আমি' বা 'তুমি' দিলে যদি ক্রিয়াটি বদলে যায়, তাহলে কর্মবাচ্য হবে।
যেমন: লোকটি জনতার দ্বারা প্রহৃত হয়েছে। তুমি জনতার দ্বারা প্রহৃত হয়েছ। এখানে কর্মটি বদলে দিতেই ক্রিয়াটি বদলে গেল।
গ) কর্তা ও কর্ম, দুটিকেই বদলে যে পুরুষই করা হোক, ক্রিয়া যদি না বদলায়, তাহলে ভাববাচ্য হবে। কারণ ভাববাচ্যের ক্রিয়া সব সময় প্রথম পুরুষে থাকে।
উদাহরণ:
তোমাকে রাস্তায় দেখা গেছে।
আমাকে রাস্তায় দেখা গেছে।
তাকে রাস্তায় দেখা গেছে।
আমাকে YouTube-এ ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন
সূচিপত্রে যেতে এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্যসমূহ
ধন্যবাদ স্যার। প্রণাম।
যদি কর্মে কে বিভক্তি থাকে তাও কর্মবাচ্য হবে?
যেমন আমাকে ভাত খেতে হবে /বল খেলতে হবে