পোস্টগুলি

কোন কারকে অনুসর্গ ব্যবহৃত হয় না

 কোন কারকে অনুসর্গের ব্যবহার নেই? আমরা জানি, বিভক্তি ও অনুসর্গের প্রয়োগ অনুসারে কারক দুই প্রকার: বিভক্তি-প্রধান ও অনুসর্গ-প্রধান। তবে বিভক্তি-প্রধান কারকেও অনুসর্গের ব্যবহার মাঝে মাঝে হয়, আবার অনুসর্গ-প্রধান কারকেও বিভক্তির ব্যবহার বিরল নয়। যেমন: অধিকরণ কারক বিভক্তি-প্রধান হলেও এতে 'মধ্যে' , 'ভিতরে' প্রভৃতি অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বাংলায় একটি বিভক্তি-প্রধান কারক এমন আছে, যাতে অনুসর্গের ব্যবহার কখনোই দেখা যায় না। সেই কারকটি হল কর্ম কারক। বাংলা কর্ম কারকে 'কে' , 'রে' প্রভৃতি বিভক্তির ব্যবহার হয়, অথবা শূন্য বিভক্তির ব্যবহার হয়। এই কারকে অনুসর্গের ব্যবহার দেখা যায় না বললেই চলে।

বর্গান্তর কাকে বলে

 বর্গান্তর কী ভাষায় ব্যবহৃত দুটি প্রধান পদ হল বিশেষ্য ও বিশেষণ। আমরা পদ পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশেষ্য থেকে বিশেষণ এবং বিশেষণ থেকে বিশেষ্য পদ গঠন করি। যেমন 'মাঠ' থেকে 'মেঠো', 'জল' থেকে 'জলীয়'। এখানে পদটির রূপ বদলে যাচ্ছে। কিন্তু বর্গান্তর সম্পূর্ণ অন্য জিনিস।  বর্গান্তরে পদের চেহারার কোনো পরিবর্তন হয় না, অথচ পদটি এক পদ থেকে অন্য পদে পরিণত হয়। সহজ ভাষায় বলা যায়: একটি বিশেষ্য পদ বিশেষণ রূপে ও বিশেষণ পদ বিশেষ্য রূপে ব্যবহৃত হলে তাকে বলা হয় বর্গান্তর। বোঝার জন্য নিচের দুটি উদাহরণ মন দিয়ে পড়ে ব্যাখ্যাটি পড়ুন। যেমন: ১: সে খুব ভালো ছেলে। -- ভালো পদটি সাধারণ ভাবে বিশেষণ পদ এবং এখানে বিশেষণ পদ রূপেই ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু ২: আমি তোমার ভালো চাই। -- 'ভালো' এখানে বিশেষ্য পদ। অর্থাৎ 'ভালো' পদটি এখানে বিশেষ্য রূপে ব্যবহৃত হচ্ছে। আমরা বলতে পারি দ্বিতীয় উদাহরণে 'ভালো' পদটির বর্গান্তর ঘটেছে। মনে রাখতে হবে: প্রথম উদাহরণে বর্

ন্যূনতম শব্দজোড় কাকে বলে

 ন্যূনতম শব্দজোড়  'ন্যূনতম' কথার অর্থ হল সবচেয়ে কম (Minimum)। ধ্বনিতত্ত্ব আলোচনার সময় কোনো ভাষার একটি ধ্বনিকে মূল ধ্বনি (বা ধ্বনিমূল) হিসেবে স্বীকার করা হবে কিনা, তা যাচাই করার একটি বিশেষ পদ্ধতি আছে। এই প্রসঙ্গেই 'ন্যূনতম শব্দজোড়'-এর ধারণাটি কাজে লাগে। আসুন জেনে নেই ন্যূনতম শব্দজোড় কাকে বলে। দুটি শব্দের মধ্যে একটিমাত্র ধ্বনি বাদ দিয়ে বাকি সবকটি ধ্বনি এক এবং এক‌ই ক্রমে সজ্জিত হলে, ওই শব্দজোড়াকে বলে ন্যূনতম শব্দজোড়। সহজ ভাষায় বলা যায়: একটিমাত্র ধ্বনির পার্থক্য আছে, এমন একজোড়া শব্দকে বলে ন্যূনতম শব্দজোড়।  এই একটিমাত্র ধ্বনি স্বর‌ও হতে পারে, ব্যঞ্জন‌ও হতে পারে। বিষয়টিকে উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক। উদাহরণ ১: কাল , খাল । এই দুটি শব্দ একটি ন্যূনতম শব্দজোড়। কারণ এই দুটি শব্দের মধ্যে একটি ছাড়া আর সব ধ্বনিই এক। বর্ণ বিশ্লেষণ করলে পাই --- ক্ + আ + ল্ + (অ) , খ্ + আ + ল্ + (অ) -- দেখা যাচ্ছে শুধু ক্ ও খ্ ধ্বনি দুটি আলাদা, আর সব‌ই এক।  উদাহরণ ২: স

বিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে | অবিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে

 বিভাজ্য ও অবিভাজ্য ধ্বনি  ধ্বনি প্রাথমিক ভাবে দুই প্রকার: বিভাজ্য ধ্বনি ও অবিভাজ্য ধ্বনি। বিভাজ্য ধ্বনি: যে ধ্বনিকে আলাদা করে ভেঙে দেখানো যায়, তাকে বিভাজ্য ধ্বনি বলে।  যেমন: কমল = ক্ + অ + ম্ + অ + ল্ + অ । এখানে দেখা যাচ্ছে 'কমল' শব্দটিকে ভাঙলে ছটি ধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে। এই ছটি ধ্বনি বিভাজ্য ধ্বনির উদাহরণ। সমস্ত স্বর ও ব্যঞ্জন ধ্বনিই বিভাজ্য ধ্বনি। বিভাজ্য ধ্বনি দুই প্রকার: স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি। বিভাজ্য ধ্বনিগুলি পাশাপাশি বসে ধ্বনিগুচ্ছ গঠন করে। এই ধ্বনিগুচ্ছ যখন অর্থ বহন করে, তখন তৈরি হয় শব্দ। অবিভাজ্য ধ্বনি: যে ধ্বনিকে বিভাজ্য ধ্বনির মতো আলাদা করে দেখানো যায় না, তাকে অবিভাজ্য ধ্বনি বলে। যেমন সুর, দৈর্ঘ্য, যতি প্রভৃতি। অবিভাজ্য ধ্বনি বিভাজ্য ধ্বনির মতো পরিস্ফুট নয়। 

খণ্ডস্বর কাকে বলে | অর্ধস্বর কাকে বলে

 খণ্ডস্বর খণ্ডস্বর মানে অর্ধস্বর। কোনো স্বরধ্বনি যখন রুদ্ধ দলের শেষে থাকে, তখন তাকে বলে খণ্ড স্বর বা অর্ধস্বর। এই ধরনের স্বরের উচ্চারণ পুরোপুরি স্বরের মতো হয় না, খানিকটা ব্যঞ্জনের বৈশিষ্ট্য মিশে যায়। নিচে উদাহরণ সহ সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা পড়ুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন। যেমন: খাই শব্দের 'ই' একটি খণ্ডস্বর। অনুরূপ ভাবে 'যাও' শব্দের 'ও', 'নেই' শব্দের 'ই', 'ব‌উ' শব্দের 'উ' খণ্ডস্বর বা অর্ধস্বর। নিয়ম অনুযায়ী দেখতে গেলে এই স্বরগুলিকে হস্ চিহ্ন যোগে লেখা উচিত, যেমন ই্, উ্ প্রভৃতি। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা করা হয় না। মনে রাখতে হবে: ই, উ এর স্বাভাবিক উচ্চারণ হলে এগুলি পূর্ণ স্বর। যেমন ইতি, ইহা, মণি, উল, কাকু প্রভৃতি শব্দের মধ্যে যে ই, উ স্বরগুলো আছে, তারা পূর্ণ স্বর। পূর্ণ স্বরকে লম্বা করে টেনে উচ্চারণ করা যাবে। যেমন: কাকুউউউউ, বা উউউউউল। খণ্ডস্বরকে টেনে উচ্চারণ করা যাবে না। যেমন: 'ব‌ই' শব্দের উচ্চারণ ব‌ইইইইইইই ক

প্রমিত ভাষা ও উপভাষার মধ্যে পার্থক্য

 প্রমিত ভাষা বা মান্য ভাষা ও উপভাষার পার্থক্য প্রমিত ভাষা কাকে বলে তা আমরা আগেই আলোচনা করেছি। এখন জেনে নেবো এর সঙ্গে উপভাষার পার্থক্য কোথায়। তবে এই পার্থক্য আলোচনা করার আগে জেন  নিতে হবে যে প্রমিত ভাষাও একটি উপভাষা। কিন্তু সাধারণ উপভাষা ও প্রমিত উপভাষার মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য আছে। নিচে পার্থক্যগুলি আলোচনা করা হলো। ১: প্রমিত ভাষা একটি ভাষাভাষী অঞ্চলে সর্বজন-ব্যবহার্য। উপভাষা কোনও ভাষাভাষী অঞ্চলের মধ্যে ক্ষুদ্রতর একটি অঞ্চলেই ব্যবহারের যোগ্য। ২: প্রমিত ভাষা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উপভাষা শিক্ষার মাধ্যম রূপে ব্যবহৃত হয় না। ৩: প্রমিত ভাষায় অধিকাংশ সাহিত্য রচিত হয়। আঞ্চলিক সাহিত্যে উপভাষা স্থান পেলেও শুধুমাত্র উপভাষাতেই রচিত সাহিত্যের সংখ্যা নগণ্য।  ৪: সরকারি কাজকর্ম প্রমিত ভাষায় নির্বাহিত হয়। আঞ্চলিক ভাষায় সরকারি কাজ হয় না। ৫: প্রমিত ভাষার কথ্য ও লেখ্য, উভয় রূপ‌ই গুরুত্বপূর্ণ। উপভাষার কথ্য রূপটিই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখ

মান্য চলিত ভাষা কাকে বলে

 মান্য বা প্রমিত বাংলা ভাষা প্রত্যেক বড়ো ভাষার‌ই একাধিক উপভাষা থাকে। কিন্তু ভাষাকে সকলের কাছে সমান ভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য সব ভাষার‌ই একটি সর্বজনগ্রাহ্য মান্য রূপ থাকা দরকার। সাধারণ ভাবে কোন‌ও ভাষার যে রূপটি ওই ভাষাভাষী সমস্ত মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং শিক্ষা ও সাহিত্য-চর্চার প্রধান মাধ্যম রূপে ব্যবহৃত হয়, তাকেই বলে ওই ভাষার মান্য বা প্রমিত রূপ। বাংলা ভাষার‌ও একটি মান্য বা প্রমিত রূপ আছে। একে বলা হয় মান্য চলিত বাংলা বা প্রমিত বাংলা। এই উপভাষাটি গড়ে উঠেছে মূলত রাঢ়ি উপভাষাকে ভিত্তি। করে। সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায়: সমস্ত বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বাংলা ভাষার যে উপভাষাকে প্রামাণ্য বাংলা ভাষা হিসেবে গণ্য করেন এবং যে উপভাষায় বাংলাভাষী মানুষের শিক্ষা ও সাহিত্য-চর্চার কাজ নির্বাহিত হয়, তাকেই বলে মান্য চলিত বাংলা বা প্রমিত বাংলা। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখার জন্য ইউটিউবে আমার চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন Ananya Pathak, তাহলেই চ্যানেল

বাংলা ভাষা কাকে বলে

 বাংলা ভাষার সংজ্ঞা পূর্ব দিকে ত্রিপুরা থেকে পশ্চিমে ঝাড়খণ্ড-বিহারের পূর্বসীমা পর্যন্ত, উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখণ্ড, তথা বঙ্গদেশে প্রচলিত ভাষাকে বলা হয় বাংলা ভাষা। ভারত ও বাংলাদেশের মোট ২৫ কোটির বেশি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। বাংলা ভাষার অনেকগুলি উপভাষা আছে। তাদের মধ্যে প্রধান পাঁচটি হলো রাঢ়ী, বঙ্গালী, ঝাড়খণ্ডী, বরেন্দ্রী ও কামরূপী। এদের মধ্যে রাঢ়ী উপভাষার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে মান্য চলিত বাংলা। বাংলা ভাষার সহোদরা ভাষা হল অসমীয়া ও ওড়িয়া। এই দুই ভাষার সঙ্গে বাংলার সাদৃশ্য লক্ষ করার মতো। বাংলা ভাষা পৃথিবীর অন্যতম শ্রুতিমধুর ভাষা হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় বাংলা ভাষার গৌরবময় ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখার জন্য ইউটিউবে আমার চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন Ananya Pathak, তাহলেই চ্যানেলটি পাবেন।

রাষ্ট্রভাষা কাকে বলে

 রাষ্ট্রভাষা রাষ্ট্রভাষা বলতে বোঝায় কোনো দেশের সরকার দ্বারা স্বীকৃত ভাষা, যার সাহায্যে সরকারি কাজকর্ম পরিচালিত হয়। রাষ্ট্রভাষা মানে সেই দেশের নাগরিকদের সবার মুখের ভাষা নাও হতে পারে। কোনো দেশের রাষ্ট্রভাষা একাধিক‌ও হতে পারে। ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি, এই ধারণাটি একটি ভুল ধারণা। ভারতের প্রধান ভাষাগুলির সবগুলিই সরকার ও সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত। 

প্লুতস্বর কাকে বলে

 প্লুতস্বর ইতিপূর্বে স্বরধ্বনির আলোচনাতে আমরা প্লুতস্বর বিষয়ে আলোচনা করেছি। এই আলোচনায় প্লুতস্বর কাকে বলে উদাহরণ সহ একটু বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। আসুন জেনে নিই প্লুতস্বর কাকে বলে।  প্লুতস্বর কাকে বলে যখন কোনো স্বরধ্বনিকে অতি দীর্ঘ রূপে উচ্চারণ করা হয়, তখন তাকে প্লুতস্বর বলে। যেমন: কাউকে দূর থেকে ডাকার জন্য ব্যবহৃত 'ওহেএএএএএএএ' শব্দে এ স্বরটি প্লুতস্বর। প্লুতস্বরকে লিখে প্রকাশ করার জন্য মূল স্বরটিকে পর পর কয়েকবার লেখা হয়। প্লুতস্বর বিভিন্ন মাত্রার হতে পারে, তবে কখনোই তিন মাত্রার কম নয়। তিন মাত্রার কমে প্লুতস্বর হয় না। যে প্লুতস্বর যত দীর্ঘ উচ্চারিত হয়, তার মাত্রা তত বেশি। প্লুতস্বর কোথায় ব্যবহৃত হয় প্লুতস্বর সাধারণত সঙ্গীতে ও আহ্বানে ব্যবহৃত হয়। সঙ্গীতে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখার জন্য ইউটিউবে আমার চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন Ananya Pathak, তাহলেই চ্যানেলটি পাবেন।

সংখ্যা বর্ণ কী | বাংলা সংখ্যা বর্ণ কতগুলি | সংখ্যা বর্ণ কয়টি ও কি কি

 সংখ্যা-বর্ণ ও বাংলা সংখ্যা-বর্ণের সংখ্যা 'সংখ্যা বর্ণ' কথাটি শুনে অনেকেই হয়তো ঘাবড়ে যেতে পারেন। ভাবতে পারেন এটা আবার কী? আসলে বিষয়টি যত জটিল ভাবছেন, আদৌ তত জটিল নয়। সমস্ত ভাষাতেই বিভিন্ন ধরনের বর্ণ থাকে। তার মধ্যে প্রধান দুটি হল ধ্বনি-বর্ণ ও সংখ্যা-বর্ণ। বাংলা ভাষায় ধ্বনি-বর্ণ হল স্বর ও ব্যঞ্জনবর্ণগুলি। বিভিন্ন ভাষায় ধ্বনি-বর্ণের সংখ্যা আলাদা হলেও বেশিরভাগ ভাষাতেই সংখ্যা-বর্ণ ১০টি করেই থাকে। বাংলা ভাষাতেও সংখ্যা বর্ণ ১০টি। নিচে সংখ্যা বর্ণের সংজ্ঞা দেওয়া হলো। সংখ্যা বর্ণ কাকে বলে যে বর্ণগুলির দ্বারা কোনো ভাষায় সংখ্যার মান প্রকাশ করা হয়, সেগুলিকে বলা হয় সংখ্যা-বর্ণ।  যেমন: ১, ২, ৩, ৪ প্রভৃতি। বাংলা ভাষার সংখ্যা-বর্ণগুলি হল ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ (মোট দশটি)। এই দশটি বর্ণের দ্বারাই বাংলা ভাষায় সমস্ত সংখ্যাকে প্রকাশ করা হয়। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখার জন্য ইউটিউবে আমার চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন Ananya Pa

শব্দ কাকে বলে

 শব্দের সংজ্ঞা আমরা কথা বলার সময় কতকগুলো ধ্বনিকে উচ্চারণ করি। কিন্তু এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে, যে ধ্বনিগুলি অর্থ বহন করে না। ধ্বনিকে পাশাপাশি সাজিয়ে বিভিন্ন রকম গুচ্ছ বানানো হয়। সেই গুচ্ছগুলি এক-একটি এক-এক রকম অর্থ বহন করে (কদাচিৎ একটি ধ্বনিও অর্থ বহন করে, তবে এমন ধ্বনি সংখ্যায় খুব কম)। এইরূপ,  অর্থবহ ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছকে শব্দ বলে। নিচে উদাহরণ দিয়ে শব্দের সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করা হলো। ধ্বনিগুচ্ছ কী ভাবে শব্দ হয় উদাহরণ হিসেবে আমরা একটি শব্দ নেবো: সূর্য। এই শব্দের মধ্যে ধ্বনি আছে ৫টি -- স্, ঊ, র্, য্, অ। এই পাঁচটি ধ্বনি একা একা কোনো অর্থ প্রকাশ করছে না। কিন্তু এরা নির্দিষ্ট নিয়মে পর পর বসলে একটি অর্থ প্রকাশ করবে। আবার এই ধ্বনিগুলিকেই এলোমেলো করে সাজালে অর্থ আসবে না। যেমন: 'যূর্স' কথাটির কোনো অর্থ নেই, তাই এক‌ই ধ্বনি থাকা সত্ত্বেও 'সূর্য' একটি শব্দ হলেও 'যূর্স' কোনো শব্দ নয়। শব্দগুলি পদে পরিণত হয়ে বাক্য গঠন করে। 

লিখিত ভাষা কাকে বলে

 লিখিত ভাষা প্রতিটি উন্নত ভাষার‌ই অন্তত একটি লিখিত রূপ ও এক বা একাধিক মৌখিক রূপ পাওয়া যায়। যে ভাষার লিখিত রূপ নেই, সে ভাষাকে উন্নত ভাষা বা সমৃদ্ধ ভাষা বলা যায় না। নিচে লিখিত ভাষার সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ দেওয়া হলো। লিখিত ভাষার সংজ্ঞা ভাষার যে মান্য রূপটি কোনো ভাষাভাষী গোষ্ঠীর মানুষ সর্বসম্মতভাবে লেখার জন্য ব্যবহার করে, তাকে বলে লিখিত ভাষা বা লেখ্য ভাষা। মান্য চলিত ভাষা ও সাধু বাংলা ভাষা হল বাংলা ভাষার দুটি লিখিত রূপ।  লিখিত ভাষার বৈশিষ্ট্য ১: একটি লিখিত ভাষার একটিই রূপ থাকে।  ২: লিখিত ভাষা ব্যাকরণসম্মত হতে হয়। ৩: লিখিত ভাষা সুগঠিত হয়। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখার জন্য ইউটিউবে আমার চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন Ananya Pathak, তাহলেই চ্যানেলটি পাবেন।

শূন্য বিভক্তির অপর নাম

 শূন্য বিভক্তি মানে কি 'অ' বিভক্তি? শূন্য বিভক্তি বলতে বোঝায় চিহ্নহীন বিভক্তি, একে অস্তিত্বহীন বিভক্তিও বলা যায়। কিন্তু আজকাল কোনো কোনো ব‌ইয়ে শূন্য বিভক্তির অপর নাম 'অ' বিভক্তি বলে চালানো হচ্ছে। এই ধারণাটি শুধু যে ভুল, তাই নয়, হাস্যকর‌ও। আসুন দেখে নিই কী ভাবে ব্যাপারটিকে ব্যাখ্যা করা যায়। অ বলে কোনো বিভক্তি নেই। বাংলা ভাষায় শব্দের অন্ত্য অ সাধারণত লোপ পায়। লোপ পায় বলেই তা শূন্য নয়। এই দুটো বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। একটা ধ্বনিতাত্ত্বিক ব্যাপারকে বিভক্তির মতো আন্বয়িক একটি উপাদানের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলাটা নিতান্তই হাস্যকর। শব্দে শূন্য বিভক্তি থাকা মানেই যে অ বিভক্তি থাকা নয়, তা একটি সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়। যেমন: তার বাক্ সহসা রুদ্ধ হল। -- এই বাক্যে 'বাক্' পদে শূন্য বিভক্তি আছে। এখন শূন্য = অ হলে বাক্ > বাক হয়ে যাবে। কারণ বাক্ + অ = বাক। কিন্তু বাস্তবে কি তা হয়? 'তড়িৎ', 'বিদ্যুৎ' বা 'ভবিষ্যৎ' শব্দে '

প্রত্যয়িত ভাষা কাকে বলে

 প্রত্যয়িত ভাষা তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় এই পরিভাষা ব্যবহৃত হয়। বাস্তবে অস্তিত্ব আছে, যে ভাষা আমাদের জ্ঞানের বৃত্তের মধ্যে রয়েছে, তাকে বলে প্রত্যয়িত ভাষা।  তবে মনে রাখতে হবে, প্রত্যয়িত ভাষা মানেই জীবন্ত ভাষা নয়। প্রত্যয়িত ভাষা জীবন্ত বা মৃত, দু ধরনের‌ই হতে পারে। মৌখিক ব্যবহার বা লিখিত নিদর্শন, যে কোনো একটি থাকলেই সেই ভাষাকে ভাষাবিজ্ঞানের পরিভাষায় প্রত্যয়িত ভাষা বলা হবে।  প্রত্যয়িত ভাষার উদাহরণ: বাংলা, সংস্কৃত, পালি, ল্যাটিন প্রভৃতি‌। প্রত্যয়িত ভাষার বিপরীত ধারণা হল প্রত্নভাষা। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখার জন্য ইউটিউবে আমার চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন Ananya Pathak, তাহলেই চ্যানেলটি পাবেন।

ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ | Dhoni poriborton examples in Bengali

 ধ্বনি পরিবর্তনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ স্বরসঙ্গতির উদাহরণ দেশি > দিশি, কুয়া > কুয়ো, বিলাতি > বিলিতি, উনান > উনুন, রামু > রেমো, গিলে > গেলে, শুন > শোনো, গফুর > গোফুর, অতি > ওতি।  অপিনিহিতির উদাহরণ করিয়া > ক‌ইর‌্যা, দেখিয়া > দেইখ্যা, আজি > আইজ, কালি > কাইল, সাধু > সাউধ। অভিশ্রুতির উদাহরণ দেইখ্যা > দেখে, ক‌ইর‌্যা > করে, ঘুরিয়া > ঘুইর‌্যা > ঘুরে।  স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষের উদাহরণ  ভক্তি > ভকতি, স্নান > সিনান, গ্লাস > গেলাস, শ্রী > ছিরি, জখ্‌ম্ > জখম, গর্জে > গরজে,  কর্ম > করম, হর্ষ > হরিষ, মুল্ক > মুলুক, শুক্রবার > শুক্কুরবার, ভদ্র > ভদ্দর, মিত্র > মিত্তির, চিত্র > চিত্তির, পুত্র > পুত্তুর (শেষ ৫টি উদাহরণকে অনেকেই সমীভবন বলে ভুল করে থাকেন। এগুলি সমীভবন নয়, স্বরভক্তি।) সমমুখ ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ ভণ্ড > ভাঁড় এবং ভাণ্ড > ভাঁড় পততি > পড়ে এবং পঠতি > পড়ে সহি > স‌ই এবং সখী > স‌ই বর্ণ বিপর্যয়ের উদাহরণ রিক্সা > রিস্কা, পিচাশ > পিশাচ, জানালা > জালান

শব্দদ্বৈত কাকে বলে | শব্দদ্বিত্ব কাকে বলে ও কত প্রকার

 শব্দদ্বৈত বাংলা ভাষায় যে কোনো ধরনের পদের‌ই দ্বিত্ব প্রয়োগ ঘটে থাকে। এটি বাংলা ভাষার এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। শব্দদ্বৈত বাংলা ভাষায় অর্থবৈচিত্র্য সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যেমন: 'বড় গাছ' বললে একটি গাছ বোঝায়, কিন্তু 'বড় বড় গাছ' বললে বহু সংখ্যক বড় গাছ বোঝায়।  এক‌ই শব্দের পর পর দু বার প্রয়োগ, সমার্থক বা প্রায় সমার্থক শব্দের যুগ্ম প্রয়োগ বা একটি শব্দের সাথে তার অনুকার শব্দের যুগ্ম প্রয়োগকে বলা হয় শব্দদ্বৈত। নিচে শব্দদ্বৈতের প্রকারভেদ ও উদাহরণ দেওয়া হলো। শব্দদ্বৈতের প্রকারভেদ শব্দদ্বৈত তিন ভাবে হয়ে থাকে। এক‌ই শব্দের দ্বৈত প্রয়োগে শব্দদ্বৈত যেমন: বড় বড় , হাজার হাজার, বছর বছর, সকাল সকাল, চোখে চোখে, নিবু নিবু, চোরে চোরে, ভাইয়ে ভাইয়ে, প্রভৃতি। সমার্থক বা প্রায় সমার্থক শব্দ যোগে শব্দদ্বৈত যেমন: রাস্তা ঘাট, জোগাড় যন্ত্র, হাঁড়ি কুঁড়ি, রাঁধা বাড়া, ধোওয়া মোছা, প্রভৃতি। অনুকার শব্দ যোগে শব্দদ্বৈত  যেমন: জল টল, বড় সড়, খাবার দাবার, ম

শব্দ কাকে বলে

 শব্দের সংজ্ঞা ও ধারণা ভাষায় ব্যবহৃত অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছকে শব্দ বলে।  ব্যাখ্যা: একটি ধ্বনিতে যদি একটি স্পষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, তবে ওই ধ্বনিটি শব্দ হিসেবে গণ্য হবে। যেমন: বাংলা ভাষায় 'এ' ধ্বনিটি একাই একটি স্বাধীন অর্থ প্রকাশ করতে পারে (যেমন: এ আমার ভাই।)। এমন হলে একটি ধ্বনিতেই একটি শব্দ গঠিত হয়। তবে এমনটা খুব কম‌ই হয়। অধিকাংশ শব্দ‌ই একাধিক ধ্বনির সমষ্টি। যেমন: 'আমি' -- এই শব্দটির মধ্যে ধ্বনি রয়েছে তিনটি -- আ + ম্ + ই। আবার 'রবীন্দ্রনাথ' - এই শব্দটির মধ্যে ধ্বনি রয়েছে ১২টি -- র্ + অ + ব্ + ঈ + ন্ + দ্ + র্ + অ + ন্ + আ + থ্ + অ (উচ্চারণে শেষের অ-টি লোপ পায়)। শব্দ ছাড়া আরও এমন ধ্বনিসমষ্টি আছে, যারা অর্থ প্রকাশ করে, কিন্তু তাদের শব্দ বলে না। যেমন: ক্রিয়ার অর্থ প্রকাশ করে, এমন ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে ধাতু বলে। যেমন: চল্, বল্ , শুন্ , খা, প্রভৃতি। বাংলা শব্দের শ্রেণিবিভাগ বাংলা শব্দকে উৎস অনুযায়ী কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। এ সম

ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম | ভাব সম্প্রসারণ করার ৭ নিয়ম

 ভাব সম্প্রসারণ কাকে বলে? ভাব সম্প্রসারণ বলতে বোঝায় কোনো তাৎপর্যপূর্ণ কথাকে বিস্তারিত ভাবে বিশ্লেষণ করা। এই তাৎপর্যপূর্ণ কথাটি হতে পারে কোনো কবিতার লাইন, কোনো প্রবাদ বা মনীষীদের উদ্ধৃতি। আসুন জেনে নিই ভাব সম্প্রসারণ করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম, যেগুলি মনে রাখলে ভাব সম্প্রসারণ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। ভাব সম্প্রসারণ করার নিয়ম (উদাহরণ সহ) ১: প্রথমে ভাব সম্প্রসারণের উদ্ধৃতিটি ভালো করে পড়তে হবে। পড়ার উদ্দেশ্য হলো উদ্ধৃতির মূল ভাবটি বুঝে নেওয়া। ২: মূল ভাবটি বোঝার জন্য উদ্ধৃতিটির সঙ্গে মানবজীবন ও মানবসমাজের সম্পর্ক খুঁজে বের করতে হবে। এই বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে বোঝাতে চেষ্টা করছি। যেমন: "কে ল‌ইবে মোর কার্য?" কহে সন্ধ্যা রবি  শুনিয়া জগৎ রহে নিরুত্তর ছবি মাটির প্রদীপ ছিল, সে কহিল "স্বামী,  আমার যেটুকু সাধ্য, করিব তা আমি।" এখানে আপাত দৃষ্টিতে সূর্য ও মাটির প্রদীপের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ভাব সম্প্রসারণের বিষয় সব সময় মানব জীবন বা মানব সমাজের সাথে যুক্ত হয়। তাহলে এখানে সূর্য আসলে কে? একটু ভাবলেই বোঝা যাবে। এখানে অস্তাচলগামী সূর্যকে মানব সমাজের মহান কর্মবীর মহাপু

স্বরধ্বনির উচ্চারণ স্থান

 উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী স্বরধ্বনির শ্রেণিবিভাগ স্বরধ্বনিকে উচ্চারণ করার সময় শ্বাসবায়ু যেহেতু কোথাও বাধা পায় না, তাই সাধারণ ভাবে এদের উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী ভাগ করা হয় না, মুখগহ্বরের আকার আকৃতি অনুসারেই ভাগ করা হয়ে থাকে। তবু বাগ্‌যন্ত্রের যে স্থানটি একটি স্বরের উচ্চারণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, সেই স্থান অনুসারে স্বরের উচ্চারণ স্থান নির্ণয় করা হয়। নিচে এই অনুসারে বাংলা স্বরগুলির উচ্চারণ স্থান নির্দেশ করা হলো। অ, আ, অ্যা - কণ্ঠ্য ই, (এবং ঈ)-- তালব্য ঋ -- মূর্ধণ্য (বাংলায় নেই) উ (এবং ঊ) -- ওষ্ঠ্য এ, ঐ -- কণ্ঠ্য-তালব্য ও, ঔ -- কণ্ঠৌষ্ঠ্য আরও পড়ুন স্বরধ্বনির বর্গীকরণ