শূন্য বিভক্তির অপর নাম

 শূন্য বিভক্তি মানে কি 'অ' বিভক্তি?

শূন্য বিভক্তি বলতে বোঝায় চিহ্নহীন বিভক্তি, একে অস্তিত্বহীন বিভক্তিও বলা যায়। কিন্তু আজকাল কোনো কোনো ব‌ইয়ে শূন্য বিভক্তির অপর নাম 'অ' বিভক্তি বলে চালানো হচ্ছে। এই ধারণাটি শুধু যে ভুল, তাই নয়, হাস্যকর‌ও। আসুন দেখে নিই কী ভাবে ব্যাপারটিকে ব্যাখ্যা করা যায়।



অ বলে কোনো বিভক্তি নেই। বাংলা ভাষায় শব্দের অন্ত্য অ সাধারণত লোপ পায়। লোপ পায় বলেই তা শূন্য নয়। এই দুটো বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। একটা ধ্বনিতাত্ত্বিক ব্যাপারকে বিভক্তির মতো আন্বয়িক একটি উপাদানের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলাটা নিতান্তই হাস্যকর। শব্দে শূন্য বিভক্তি থাকা মানেই যে অ বিভক্তি থাকা নয়, তা একটি সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়। যেমন: তার বাক্ সহসা রুদ্ধ হল। -- এই বাক্যে 'বাক্' পদে শূন্য বিভক্তি আছে। এখন শূন্য = অ হলে বাক্ > বাক হয়ে যাবে। কারণ বাক্ + অ = বাক। কিন্তু বাস্তবে কি তা হয়? 'তড়িৎ', 'বিদ্যুৎ' বা 'ভবিষ্যৎ' শব্দে 'এ'/'এর' বিভক্তি যোগ করলে ৎ > ত হয়ে যায়। শূন্য = অ হলে এক‌ই ভাবে শূন্য বিভক্তি যোগের পর ৎ > ত হয়ে যেতো। যেমন: বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে > বিদ্যুত চমকাচ্ছে হতো। অর্থাৎ আমি বলতে চাইছি অ বিভক্তি বলে যদি কোনো বিভক্তি থাকতো এবং তা যদি শূন্য বিভক্তির নামান্তর হতো, তাহলে বাংলায় ৎ বর্ণ এবং হস্ চিহ্নের অস্তিত্ব থাকতো না। সব ক্ষেত্রে অ বিভক্তি যুক্ত হয়ে যেতো। ব্যাকরণের বিভিন্ন ধরনের আলোচনা দেখার জন্য ইউটিউবে আমার চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন Ananya Pathak, তাহলেই চ্যানেলটি পাবেন।

মন্তব্যসমূহ

আর‌ও পড়ে দেখুন

মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ

সাধু ও চলিত ভাষার ৭টি বৈশিষ্ট্য ও রূপান্তর | Sadhu o cholit bhasha

অপিনিহিতি কাকে বলে

সূচিপত্র | Bengali Grammar

তৎসম শব্দ কাকে বলে | তৎসম শব্দের তালিকা

১০০+ সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ | সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দের তালিকা | Samochcharito Vinnarthok shabdo

তদ্ভব শব্দ কাকে বলে | তদ্ভব শব্দের তালিকা

ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য