পোস্টগুলি

বাংলা ব্যাকরণ ও তার শাখা

ব্যাকরণের বিভিন্ন শাখা ও তার আলোচ্য বিষয় ব্যাকরণের কোন অংশে কোন বিষয়ের আলোচনা করা হয়, এ নিয়ে অনেকের মনেই বিভ্রান্তি আছে। ব্যাকরণের অধিকাংশ বাজারচলতি  ব‌ইয়ে এই নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি। অনন্য-বাংলা ব্লগের এই আলোচনাটি আশা করি সেই বিভ্রান্তি দূর করতে পারবে। এই আলোচনাতে আমরা ব্যাকরণের কোনো বিশেষ টপিকের আলোচনা করবো না, বরং কোন টপিকটি কোন ভাগে পড়বে, সেই আলোচনাই করবো। নিচে একটি তালিকার আকারে ব্যাকরণের মূল চারটি শাখা ও তাদের আলোচ্য বিষয়গুলি তুলে ধরলাম। আশা করি এই আলোচনাটি ছাত্রছাত্রীদের খুব‌ই কাজে আসবে, কারণ এই অংশ থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অনেক সময় প্রশ্ন আসতে দেখা গেছে। তাহলে আসুন, আমরা মূল আলোচনায় প্রবেশ করি। ব্যাকরণের বিভিন্ন শাখা ব্যাকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখাগুলি  হল: ধ্বনিবিজ্ঞান, ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব , বাক্যতত্ত্ব ও শব্দার্থতত্ত্ব। প্রসঙ্গত বলে রাখি ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব এক বিষয় নয়। ধ্বনিবিজ্ঞানে ধ্বনির বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করা হয়। এর সঙ্গে শব্দতরঙ্গ, বিভিন্ন ধ্বনির কম্পাঙ্ক ইত্যাদি বিষয়ের যোগ রয়েছে। বাংলার সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ক

পুরুষ কাকে বলে? পুরুষের ধারণা ও শ্রেণিবিভাগ | Purush kake bole

ছবি
পুরুষ কাকে বলে? আমি-আমরা উত্তম পুরুষ, তুমি-তোমরা মধ্যম পুরুষ, সে-তারা-রাম-শ্যাম প্রথম পুরুষ। এই পর্যন্ত আমরা সবাই জানি। প্রায় সমস্ত ব‌ইয়েই এই ধারণাটি দেওয়া আছে। কিন্তু পুরুষ কাকে বলে? পুরুষ বিষয়টি আসলে কী? এই পোস্টে আমাদের আলোচনা এই নিয়েই। আমরা জানি বাক্যের মূল উপাদান হল পদ। পাঁচ প্রকার পদের মধ্যে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদগুলিকে তিনটি পুরুষ বা পক্ষে বিভক্ত করা হয়। বাক্য গঠনে এই পুরুষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়াটি গঠনে বাক্যের উদ্দেশ্য-পদটির পুরুষের ভূমিকা থাকে। এই কারণেই পুরুষ জানা দরকার। পুরুষ আসলে কী? পুরুষ হল বাক্যস্থ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের এক ধরনের পরিচিতি। পুরুষ কী তা বোঝার জন্য প্রথমেই বুঝতে হবে যে, প্রত্যেক বাক্যের একজন বক্তা থাকে এবং প্রতিটি বাক্য‌ই কোনো না কোনো শ্রোতার উদ্দেশ্যে বলা হয়ে থাকে। শ্রোতা একসঙ্গে একাধিক হতে পারে। বক্তা সাধারণভাবে একাধিক না হলেও একাধিক ব্যক্তির হয়ে কেউ কথা বলতেই পারে। যেমন: ধরা যাক একটি ছেলে স্কুলের সমস্ত ছাত্রছাত্রীর তরফে শিক্ষকদিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছে। তখন সে যদি বলে 'আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদ

বিভক্তি কাকে বলে | শব্দবিভক্তি ও ক্রিয়াবিভক্তি বা ধাতুবিভক্তি

 বিভক্তির ধারণা 'বিভক্তি' কথার আক্ষরিক অর্থ হল 'বিভাজন'। বিভক্তিগুলি পদকে বাক্যের মধ্যে তাদের ভূমিকা ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভক্ত করে। বিভক্তি আছে বলেই প্রতিটি পদ বাক্যের মধ্যে নিজের অবস্থান, গুরুত্ব ও কার্যকারিতা স্পষ্ট করতে পারে। একক ভাবে শব্দ বা ধাতুকে বাক্যে ব্যবহার করা যায় না। কারণ বিভক্তিহীন শব্দ বা ধাতু বাক্যের মধ্যে নিজের অবস্থান ও কার্যকারিতা খুঁজে পায় না। পদগুলির ভিতর পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনেও বিভক্তি বড়ো ভূমিকা পালন করে। সুতরাং বাক্যের মধ্যে বিভক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, অথচ বিভক্তির সুস্পষ্ট কোন‌ও অর্থ নেই। বিভক্তি এমন এক সূক্ষ্ম সুতোর মতো কাজ করে, যা বাক্যস্থ পদগুলিকে নিজের নিজের জায়গায় বেঁধে রাখে। বিভক্তি কাকে বলে? যে ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ শব্দ বা ধাতুর সাথে যুক্ত হয়ে পদ গঠন করে এবং বাক্যের মধ্যে পদগুলির ভূমিকা, পারস্পরিক সম্পর্ক ও বৈশিষ্ট্যকে স্পষ্ট করে, তাকে বিভক্তি বলে। বিভক্তির শ্রেণিবিভাগ বিভক্তিকে তার ভূমিকা অনুসারে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ১: শব্দবিভক্তি ও ২: ধাতুবিভক্তি বা ক্রিয়াবিভক্তি। শব্দবিভক্তি যে বিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক

রূপমূল, রূপ ও সহরূপ | Rup mul | Rup o saha rup

 রূপমূলের ধারণা  ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি, ভাষার ক্ষুদ্রতম উপাদান হল ধ্বনি। কিন্তু একক ভাবে ধ্বনির সাধারণত কোনো অর্থ থাকে না। এমনটা খুব কম‌ই দেখা যায় যে, একটিমাত্র ধ্বনির সাহায্যেই কোনো অর্থ প্রকাশিত হচ্ছে। তাই একাধিক ধ্বনিকে একসঙ্গে জুড়ে অর্থবহ ধ্বনিগুচ্ছ গঠন করা হয়। তবে ধ্বনিগুচ্ছ মানেই তা রূপমূল নয়। তবে রূপমূল কাকে বলে?  রূপমূলের সংজ্ঞা ভাষায় ব্যবহৃত অর্থপূর্ণ একক ধ্বনি অথবা অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম ধ্বনিগুচ্ছকে রূপমূল বা রূপিম বলে। একটিমাত্র ধ্বনি যদি অর্থ প্রকাশে সক্ষম হয়, তবে তা অবশ্য‌ই ক্ষুদ্রতম হবে, ফলে রূপিম‌ও হবে। যেমন: "এ আমার ভাই।" এই বাক্যে 'এ' পদটি একটিমাত্র ধ্বনি নিয়েই গঠিত এবং অর্থপূর্ণ, তাই এটি একটি রূপমূলের উদাহরণ। কিন্তু আগেই বলেছি এমন ধ্বনির সংখ্যা খুব কম। যে কোনো ভাষায় যত রূপমূল দেখা যায়, তার অধিকাংশ‌ই একাধিক ধ্বনির সমষ্টি। উপরোক্ত উদাহরণে 'ভাই' শব্দটিও একটি রূপমূল। কারণ এই শব্দটিকে ভাঙলে আর কোনো ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ একক পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু ওই উদাহরণে 'আমার' পদটিকে একটি রূপমূল বলা যাবে না। কারণ ওর মধ্যে দুটি অংশ

সংখ্যা ও পূরণবাচক বিশেষণ | সংখ্যাবাচক শব্দ ও পূরণবাচক শব্দ | Sonkha bachok o puran bachak biseshon

সংখ্যাবাচক ও পূরণবাচক শব্দের পার্থক্য বিশেষণ অধ্যায়ে সংখ্যাবাচক ও পূরণবাচক শব্দ নিয়ে আমরা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি। কিন্তু এই দুই শব্দ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে দেখেছি। তাই এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার প্রয়োজন অনুভব করলাম। প্রথমেই বলে রাখা দরকার, এই দুটি শব্দ নিয়ে বিভ্রান্তির দুটি বড়ো কারণ রয়েছে। আর সেই কারণ দুটি হলো, এরা উভয়েই বিশেষণ এবং এই দুই শব্দের‌ই জন্ম হয়েছে সংখ্যা থেকে। তাই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য প্রথমেই আমরা বুঝে নেবো সংখ্যাবাচক ও পূরণবাচক শব্দ কাকে বলে এবং এদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়। তার পর তুলনামূলক উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আর‌ও স্পষ্ট করে নেবো। সংখ্যাবাচক শব্দ - কাকে বলে  যে বিশেষণ পদগুলি মূলত বিশেষ্য পদের সংখ্যা বোঝায়, তাদের সংখ্যাবাচক শব্দ বলে।  সংখ্যাবাচক শব্দের উদাহরণ: পাঁচটি কলম, একশো লোক, সাড়ে তিনখানা আপেল, আধখানা চাঁদ, বেলা স‌ওয়া দশটা, প্রভৃতি। সংখ্যা শব্দের শ্রেণিবিভাগ ১: গণনা সংখ্যাশব্দ - কাকে বলে? যে সংখ্যাশব্দগুলি গণনার কাজে ব্যবহার করা হয়, অর্থাৎ পূর্ণ সংখ্যার মান প্রকাশ করে, তাদের বলা হয় গণনা সংখ্যাশব্দ।

সমাস নির্ণয়ের নিয়ম ও ব্যাখ্যা সহ উদাহরণ | সমাসের উদাহরণ | Somas example in Bengali | Bengali somas practice

 সমাস নির্ণয়ের নিয়ম সমাসের উদাহরণে যাওয়ার আগে আমরা সমাস নির্ণয়ের কয়েকটি নিয়ম জেনে নেবো। ১: সমাস নির্ণয় করার আগে সমস্তপদটির অর্থ জানতে হবে। সমস্তপদের অর্থ না জেনে সমাস নির্ণয় করা প্রায় অসম্ভব। এখানে আর‌ও একটি কথা বলে রাখা ভালো, কোনো শব্দের প্রচলিত অর্থ ও মূল অর্থ আলাদা হলে মূল ও আদি অর্থটিই সমাস নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: গবেষণা শব্দের ব্যাসবাক্য হবে গো-এর এষণা, অর্থাৎ গোরু খোঁজা। বর্তমানে এই অর্থে শব্দটির ব্যবহার হয় না, কিন্তু সমাসে এই অর্থটিই ধরতে হবে। এর কারণ, সমাসবদ্ধ শব্দটি যখন তৈরি হয়েছিল, তখন এই ভাবেই হয়েছিল। ২: সমাস নির্ণয়ের দ্বিতীয় ধাপে ব্যাসবাক্য নির্ণয় করতে হবে। ব্যাসবাক্য নির্ণয় করতে গিয়ে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। যদি সমাসবদ্ধ শব্দটির অর্থ জানা থাকে, তাহলে শব্দের মূল অর্থটিকে বিশ্লেষণ করলেই ব্যাসবাক্যটি পাওয়া যায়। এখানে খেয়াল রাখতে হবে, সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ও সবচেয়ে যথাযথ বিশ্লেষণটি করতে হবে। যথাসম্ভব কম শব্দ ব্যবহার করতে হবে। এক একটি ব্যাসবাক্যকে চাইলে বড়ো করা যায়, কিন্তু তা করা যাবে না। ৩: সমাস নির্ণয়ের তৃতীয় ধাপে দেখতে হবে

১০০+ কারকের উদাহরণ ও ব্যাখ্যা | Karok example | Karok practice

কারকের অনুশীলন: ১০০+ ব্যাখ্যা সহ উদাহরণ কারক নির্ণয়ের নিয়ম প্রথমেই বলে রাখি: কারক যদি বিস্তারিত শিখতে চান, তাহলে আগে পড়ুন কারকের বিস্তারিত আলোচনা । আর যদি কারকের উদাহরণ  আলোচনার মাধ্যমে কারক নির্ণয়ের নিয়ম শিখতে চান, তবে এই পোস্টটি পড়ার পর বিস্তারিত আলোচনায় যাবেন। কারক বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে সহজ হলেও কারক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বহু বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবার সুযোগ থেকে যায়। এই বিভ্রান্তি দূর করার একমাত্র উপায় হলো প্রচুর অনুশীলন ও সেই সঙ্গে প্রকৃত ব্যাখ্যা। আজকের এই পোস্টে দিলাম কারকের শতাধিক ব্যাখ্যা সহ প্রশ্নোত্তর। যে উদাহরণগুলো একটু কঠিন, সেগুলো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে দিয়েছি। প্রতিটি উদাহরণ মনোযোগ সহকারে পড়লে কারক নির্ণয়ের বিভ্রান্তি অনেকটাই দূর হবে আশা করি‌।  উদাহরণে যাওয়ার আগে কিছু প্রয়োজনীয় কথা বলে নেওয়া দরকার। কারক-নির্ণয়ের অনুশীলন করার সময় মাথায় রাখতে হবে, কারক একটি ক্রিয়া-কেন্দ্রিক বিষয়। ক্রিয়া-পদ‌ই এখানে প্রধান উপজীব্য। সংশ্লিষ্ট পদটির থেকে ক্রিয়া-পদটিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করতে হবে। তবেই কারকের হদিশ পাওয়া যাবে। এই কারণেই অনেক সময় দেখা যায় এক‌ই শব্দ বা পদ

বাংলা ব্যাকরণের প্রশ্নোত্তর | SLST বাংলা ব্যাকরণ

বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর (১০০+) বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্ব বাড়ছে। তাই চেষ্টা করলাম ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সম্বলিত একটি সেগমেন্ট চালু করার। এস এল এস টি জোন বলে একটি অংশ সাইটে যুক্ত করলাম। এই অংশটি SLST ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থীদের কাজে লাগবে বলে আশা করি।  এখানে পাওয়া যাবে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় বাংলা ব্যাকরণে যে ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে সেই ধরনের প্রশ্ন, তাদের উত্তর ও প্রয়োজনবোধে উত্তরগুলির বিস্তারিত ব্যাখ্যা। এই ব্যাখ্যাগুলি ছাত্রছাত্রীদের ভালো লাগছে জেনে আনন্দিত হয়েছি। তবে শুধুমাত্র প্রশ্নোত্তর পড়লেই হবে না। সাফল্য পাওয়ার জন্য, বিষয়গুলি ভালো করে শেখার জন্য অনন্য-বাংলা ব্লগে আলোচিত বিভিন্ন টপিকের মূল আলোচনাগুলি পড়ে নিতে হবে। মূল আলোচনায় অনেক কথাই বলা যায় না। কারণ তাহলে আলোচনা অত্যন্ত বড়ো হয়ে যাবে। তাই পরীক্ষার্থীদের বলবো, শুধুমাত্র প্রশ্নোত্তর নয়, মূল আলোচনা এবং SLST ZONE এর প্রশ্নোত্তর একসাথে পড়ুন। এর পর চেষ্টা করবো এক একটি অধ্যায় এক একটি পোস্টে কভার করার। ত