স্বরলোপ কাকে বলে

স্বরলোপের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ

সাধারণত দ্রুত উচ্চারণ করার তাগিদে শব্দের আদি, মধ্য বা অন্ত্য অবস্থান থেকে একটি স্বরধ্বনি লুপ্ত হলে তাকে বলা হয় স্বরলোপ। কেউ কেউ স্বরলোপের অপর নাম সম্প্রকর্ষ বলে থাকেন। এই ধারণা ঠিক নয়। সব ধরনের স্বরলোপ সম্প্রকর্ষ নয়। শুধুমাত্র মধ্যস্বরলোপকে সম্প্রকর্ষ বলা যায়। নিচে স্বরলোপের তিনটি শ্রেণিবিভাগ উদাহরণ সহ আলোচনা করা হলো।

আদি স্বরলোপ

শব্দের গোড়ায় অবস্থিত স্বরধ্বনিটি লুপ্ত হলে তাকে বলা হয় আদি-স্বরলোপ। 
যেমন: অলাবু > লাউ, অতসী > তিসি,  উধার > ধার । 

মধ্য স্বরলোপ বা সম্প্রকর্ষ

শব্দের মধ্যে অবস্থিত স্বরধ্বনি লোপ পেলে তাকে বলা হয় মধ্যস্বরলোপ বা সম্প্রকর্ষ। একে স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষের বিপরীত প্রক্রিয়াও বলা যায়। স্বরভক্তিতে মধ্যস্বরের আগম ঘটে, এখানে মধ্যস্বরের লোপ ঘটছে।

যেমন: গামোছা > গামছা, নাতিনি > নাতনি, ভাগিনেয় > ভাগিনে > ভাগ্নে, কাঁচাকলা > কাঁচকলা। 

এখন একটি উদাহরণকে বিশ্লেশণ করে দেখি। 
গামোছা > গামছা = গ্ + আ + ম্ + ও + ছ্ + আ > গ্ + আ + ম্ + ছ্ + আ। মাঝে অবস্থিত ও স্বরটি লোপ পেয়েছে।

অন্ত্য স্বরলোপ

শব্দের শেষে অবস্থিত স্বরধ্বনিটি লুপ্ত হলে তাকে বলা হয় অন্ত্য স্বরলোপ। 
যেমন: রাশি > রাশ্, আজি > আজ্, সন্ধ্যা > সাঁঝ্
 উদাহরণ বিশ্লেষণ করে দেখি
রাশি > রাশ্ = র্ + আ + শ্ + ই > র্ + আ + শ্ ।

বাংলা ভাষায় শব্দের শেষে অ থাকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা উচ্চারিত হয় না। এটিও এক ধরনের অন্ত্য স্বরলোপ। যেমন: রাম > রাম্ , ভাত > ভাত্ , মান > মান্  । এই শব্দগুলির শেষে একটি করে অ আছে, কিন্তু উচ্চারণ করার সময় সেগুলি লোপ পায়। 


ইউটিউবে আমার ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak).

মন্তব্যসমূহ

আর‌ও পড়ে দেখুন

তির্যক বিভক্তি কাকে বলে

লোকনিরুক্তি কাকে বলে

মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ

অপিনিহিতি কাকে বলে

ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য

অভিশ্রুতি কাকে বলে?

নিরপেক্ষ কর্তা কাকে বলে

বিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে | অবিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে