মাত্রা কাকে বলে উদাহরণ দাও
মাত্রার সংজ্ঞা ও উদাহরণ
ছন্দ শেখার জন্য দল ও মাত্রা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতেই হবে। যারা গান গায়, তাদেরকেও মাত্রা বুঝতে হয়। দল বিষয়ে ধারণা না থাকলে অবশ্যই দল সম্পর্কে আলোচনাটি পড়ে নিন। এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক মাত্রা কাকে বলে, মাত্রা আসলে কী। মাত্রা হল দল উচ্চারণের সময়। অর্থাৎ একটি দলকে উচ্চারণ করতে যতটা সময় লাগে, তাকে ওই দলের মাত্রা বলে। একটি দলের মাত্রা হতে পারে এক, দুই বা বহু। ছন্দে বহু মাত্রার ব্যবহার নেই, সঙ্গীতে আছে। নিচে এক, দুই ও বহু মাত্রার ধারণা এবং মাত্রার উদাহরণ দেওয়া হলো।
এক মাত্রা, দুই মাত্রা ও বহু মাত্রা
সংস্কৃত ছন্দ শাস্ত্রে হ্রস্ব স্বর উচ্চারণের সময়কে এক মাত্রা ও দীর্ঘ স্বর উচ্চারণ করার সময়কে দুই মাত্রা ধরা হয়। বাংলা উচ্চারণে যেহেতু দীর্ঘ স্বরের তেমন কোনো অস্তিত্ব নেই, সেহেতু মাত্রা নির্ণয়ের এই পদ্ধতি বাংলা ছন্দের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় না। এই দিক থেকে বাংলার প্রতিটি স্বরকেই এক মাত্রা ধরতে হয়।
সাধারণ বাংলা উচ্চারণে মাত্রার উদাহরণ
সাধারণ উচ্চারণে বাংলায় মুক্ত দল এক মাত্রা ও রুদ্ধ দল দুই মাত্রা। যেমন
রবীন্দ্রনাথ = র-বীন্-দ্র-নাথ্ -- ১+২+১+২
বিদ্যাসাগর = বিদ্-দা-সা-গর্ -- ২+১+১+২
বাংলায় যে দলগুলি এক মাত্রা
বাংলায় সমস্ত মৌলিক স্বরধ্বনি এক মাত্রা। যেমন: অ, আ, এ প্রভৃতি। অচল শব্দের প্রথম দল অ, এটি একমাত্রা।
গোড়ায় একটি ব্যঞ্জন ও তার পর একটি মৌলিক স্বরের যোগে গঠিত দলও এক মাত্রা। যেমন: কলম শব্দের প্রথম দল ক = ক্ + অ। এটি এক মাত্রা।
এক কথায় বললে বাংলায় সব মুক্ত দল এক মাত্রা। *
বাংলায় যে দলগুলি দুই মাত্রা
এক কথায় বললে বাংলা ভাষায় রুদ্ধ দলগুলি দুই মাত্রা।
একটি যৌগিক স্বরধ্বনি নিয়ে গঠিত দল দুই মাত্রা। যেমন: ঐরাবত শব্দের 'ঐ' দলটি দ্বিমাত্রিক। ঔষধ শব্দের 'ঔ' দলটিও তাই।
গোড়ায় একটি স্বর ও তার পর একটি ব্যঞ্জন নিয়ে গঠিত দল দুই মাত্রা হয়। যেমন: অক্ষম শব্দের প্রথম দল 'অক্' একটি দ্বিমাত্রিক দল।
বহু মাত্রা
বহু মাত্রা একমাত্র প্লুতস্বরের হয়। একটি স্বরকে অতিরিক্ত দীর্ঘ রূপে উচ্চারণ করলে তাকে প্লুতস্বর বলে।
দূর থেকে ডাকার সময় ও গান গাওয়ার সময় এই স্বরের ব্যবহার হয়।
মন্তব্যসমূহ