ধ্বনি পরিবর্তন মনে রাখার কৌশল
ধ্বনি পরিবর্তন মনে রাখার উপায়
ধ্বনি পরিবর্তন চিনতে অনেকেই অনেক সময় সমস্যায় পড়ে যায়। তাই আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো ধ্বনি পরিবর্তন মনে রাখার কিছু সহজ উপায় বা কৌশল। যদিও ধ্বনি পরিবর্তন মনে রাখার জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল প্রতিটি ধারা থেকে একটি করে উদাহরণ মনে রাখা ও সেই উদাহরণটি বর্ণ বিশ্লেষণ করে বুঝে নেওয়া। এই পদ্ধতির বাইরেও কিছু শর্টকাট টেকনিক জানাবো আজকের পোস্টে।
১: অপিনিহিতি: মূল শব্দে ই-কার বা উ-কার থাকবে এবং যে ব্যঞ্জনের গায়ে এই ই-কার বা উ-কার থাকবে, ধ্বনি পরিবর্তনের পর সেই ব্যঞ্জনের আগে ই বা উ হবে। যেমন: কালি > কাইল। ল-এর গায়ে ই-কার ছিলো, তাই ল-এর আগে ই হলো।
২: সমীভবন: দুটো আলাদা ব্যঞ্জন পাশাপাশি বা যুক্ত অবস্থায় থাকবে। ধ্বনি পরিবর্তনের পর আলাদা ব্যঞ্জন দুটো বদলে একই ব্যঞ্জন বা পাশাপাশি ব্যঞ্জনে পরিণত হবে (পাশাপাশি ব্যঞ্জন যেমন: ত-থ, দ-ধ, চ-ছ ইত্যাদি)। উদাহরণ: ধর্ম > ধম্ম। র-ম পাশাপাশি ছিলো (রেফ মানে র-এ ম)। পরিবর্তনের পর দুটোই ম হয়ে গেছে।
৩: অভিশ্রুতি: অভিশ্রুতি হয় অপিনিহিতির পর। আগে অপিনিহিতি হবার পর স্বরধ্বনির আরও পরিবর্তন ঘটলেই বুঝতে হবে অভিশ্রুতি হয়েছে। যেমন: দেখিয়া > দেইখ্যা > দেখে।
৪: ঘোষীভবন: অঘোষ ধ্বনি ও ঘোষ ধ্বনি চিনতে হবে। মূল শব্দের একটি অঘোষ ধ্বনি যদি পরিবর্তনের পর একই বর্গের ঘোষ ধ্বনিতে পরিণত হয়, তাহলে বুঝতে হবে ঘোষীভবন হয়েছে।
৫: স্বরভক্তি: মূল শব্দে যুক্ত ব্যঞ্জন থাকবে এবং ধ্বনি পরিবর্তনের পর সেই যুক্ত ব্যঞ্জন অবশ্যই ভেঙে যাবে। যুক্ত ব্যঞ্জনের প্রথম ব্যঞ্জনটির গায়ে এ-কার, উ-কার, ই-কার, প্রভৃতি কার চিহ্ন আসতে পারে, নাও পারে। যেমন: স্নান > সিনান -- স্ন ভেঙেছে, স-তে ই-কার এসেছে।
কুল্ফ (=কুল্ফ) > কুলুপ -- ল্ফ ভেঙেছে, উ-কার এসেছে।
ধর্ম > ধরম -- র্ম ভেঙেছে, কোনো কার আসেনি (কারণ এখানে অ স্বর এসেছে।)
৬: নাসিক্যীভবন: মূল শব্দে একটি নাসিক্য ব্যঞ্জন (ঙ, ঞ, ন, ণ, ম) থাকবে। ধ্বনি পরিবর্তনের পর সেই নাসিক্য ব্যঞ্জন লোপ পাবে এবং আগের বর্ণে একটি চন্দ্রবিন্দু আসবে। যেমন: চন্দ্র > চাঁদ, ভাণ্ড > ভাঁড়।
মন্তব্যসমূহ