জোড়কলম শব্দ কাকে বলে

জোড়কলম শব্দ

আলোচনা: অনন্য পাঠক
ভাষায় নতুন নতুন শব্দ গঠনের বহু পদ্ধতি রয়েছে। এইসব পদ্ধতির মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে মজার পদ্ধতি হল জোড়কলম। এই পদ্ধতিতে শব্দ গঠন করার ক্ষেত্রে ভাষাতত্ত্বের কোনো নিয়ম মানতে হয় না। দুটো শব্দের অংশবিশেষকে জুড়ে দিলেই হলো। সাধারণ ভাবে একটা শব্দের প্রথম অংশ ও অন্য একটা শব্দের শেষ অংশ জুড়েই জোড়কলম শব্দ গঠন করা হয়। অবশ্য অনেক সময় একটা গোটা শব্দের সঙ্গে অন্য একটা শব্দের অংশবিশেষকে জুড়েও জোড়কলম শব্দ গঠন করা হয়। আসুন জেনে নিই জোড়কলম শব্দ কাকে বলে -- একটি শব্দের অংশবিশেষের সঙ্গে অপর একটি শব্দের অংশবিশেষকে জুড়ে দিয়ে যে নতুন শব্দ পাওয়া যায়, তাকে জোড়কলম শব্দ বলে।  

জোড়কলম শব্দের উদাহরণ

বাংলা জোড়কলম শব্দের উদাহরণ - ধোঁয়া + কুয়াশা = ধোঁয়াশা, মিন্নৎ + বিনতি = মিনতি প্রভৃতি। সুকুমার রায় বেশ কয়েকটি জোড়কল শব্দ গঠন করেছেন, যেমন: হাতিমি, বকচ্ছপ, সিংহরিণ, গিরগিটিয়া প্রভৃতি। সুকুমার রায়ের জোড়কলম শব্দগুলির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। তিনি যে শব্দগুলিকে গ্রহণ করেছেন, তাদের প্রথমটির শেষ ধ্বনি ও পরেরটির প্রথম ধ্বনি অভিন্ন। তাই সুকুমারের জোড়কলম শব্দগুলির মধ্যে দুটি শব্দকেই পূর্ণাঙ্গ রূপে পাওয়া যায়, শুধুমাত্র একটি অক্ষর সাধারণ(common) অক্ষর রূপে থাকে। যেমন: হাতিমি-র মধ্যে হাতি ও তিমি, উভয়কেই গোটাগুটি পাওয়া যাচ্ছে, 'তি' অক্ষরটি common হিসেবে থাকছে। 

ইংরেজি জোড়কলম শব্দের উদাহরণ - Breakfast+Lunch = Brunch, Information+Entertainment = Infotainment, Smoke+Fog = Smog, Motor+Hotel = Motel প্রভৃতি।

জোড়কলম শব্দের নামকরণের কারণ

গাছের কৃত্রিম প্রজননের একটি পদ্ধতি হল জোড়কলম। এই পদ্ধতিতে একটি গাছের কাণ্ডের সঙ্গে অন্য একটি গাছের কাণ্ড জুড়ে দেওয়া হয়। জোড়কলম শব্দ গঠনের সময় একটি শব্দের অংশবিশেষের সঙ্গে অন্য একটি শব্দের অংশবিশেষকে জুড়ে দেওয়া হয়। এই কারণে জোড়কলম শব্দের এ রূপ নামকরণ হয়েছে।


আর‌ও পড়ুন

মন্তব্যসমূহ

আর‌ও পড়ে দেখুন

তির্যক বিভক্তি কাকে বলে

লোকনিরুক্তি কাকে বলে

মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ

অপিনিহিতি কাকে বলে

ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য

অভিশ্রুতি কাকে বলে?

নিরপেক্ষ কর্তা কাকে বলে

বিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে | অবিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে