শ্রুতিধ্বনি কাকে বলে

 শ্রুতিধ্বনির সংজ্ঞা

 শ্রুতিধ্বনি কাকে বলে - দুটি বা তার বেশি স্বরধ্বনি পাশাপাশি উচ্চারিত হলে দুটি স্বরের মাঝে একটি অতিরিক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির আগমন ঘটে। এই অতিরিক্ত ধ্বনিকে শ্রুতিধ্বনি বলে। আমরা যখন 'ক-এক' বলতে যাই, তখন আমাদের বাগ্‌যন্ত্র নিজে থেকেই 'কয়েক' উচ্চারণ করে। একটি বাড়তি ব্যঞ্জন 'য়' নিজে থেকেই চলে আসে। এই বাড়তি 'য়' হল শ্রুতিধ্বনি।

সুকুমার সেনের ব্যাখ্যা

শব্দমধ্যস্থ বিভিন্ন ধ্বনিকে উচ্চারণ করার সময় জিহ্বাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে হয়। এই ভাবে যাওয়ার সময় দুটি ধ্বনির মাঝখানে অসতর্ক ভাবে জিহ্বা যদি একটি বাড়তি ব্যঞ্জন ধ্বনি উচ্চারণ করে ফেলে, তাহলে তাকে শ্রুতিধ্বনি বলে। যেমন: ক+এক = কয়েক। এখানে য় শ্রুতিধ্বনি হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে। ভাষার ইতিবৃত্ত ব‌ইয়ে সুকুমার সেনের ব্যাখ্যায় একটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য। তিনি দুটি ধ্বনির মাঝে আসা অতিরিক্ত ব্যঞ্জনকে শ্রুতিধ্বনি বলেছেন। এখানে তিনি স্বর ও ব্যঞ্জনে ভেদ করেননি। প্রথাগত ব্যাকরণে দুটি ব্যঞ্জনের মাঝে আগত ব্যঞ্জনকে শ্রুতিধ্বনি বলে স্বীকার করা হয় না। যেমন: বানর>বান্দর। প্রথাগত ব্যাকরণে এগুলি মধ্যব্যঞ্জনাগম। সুকুমার সেন এই 'দ'-কেও শ্রুতিধ্বনি বলেছেন।

শ্রুতিধ্বনির উদাহরণ

মা+এর = মায়ের, যা+আ = যাওয়া, কে+এলো = কেয়েলো, না+আ = নাওয়া, খা+আ = খাওয়া প্রভৃতি। এই উদাহরণগুলিতে য়্ বা ওয়্ ধ্বনি এসেছে শ্রুতিধ্বনি হিসেবে।

শ্রুতিধ্বনি কত প্রকার?

শ্রুতিধ্বনি কত প্রকার -- এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় বাংলা ভাষায় শ্রুতিধ্বনি দুই প্রকার, য়-শ্রুতি ও ওয়্-শ্রুতি। দুটি স্বরের মাঝে এই দুটি শ্রুতিধ্বনির আগমন ঘটে। 

আর‌ও পড়ুন

মন্তব্যসমূহ

আর‌ও পড়ে দেখুন

মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ

সাধু ও চলিত ভাষার ৭টি বৈশিষ্ট্য ও রূপান্তর | Sadhu o cholit bhasha

সূচিপত্র | Bengali Grammar

তৎসম শব্দ কাকে বলে | তৎসম শব্দের তালিকা

ব্যঞ্জনধ্বনির বর্গীকরণ | উচ্চারণ স্থান অনুসারে ব্যঞ্জনের শ্রেণিবিভাগ

বাচ্য পরিবর্তন | Bachya Paribartan | বাচ্য পরিবর্তনের নিয়ম ও উদাহরণ

কৃৎ প্রত্যয়ের বিস্তারিত আলোচনা | প্রকৃতি প্রত্যয়

বাচ্য : বিস্তারিত আলোচনা ও শ্রেণিবিভাগ | Bachyo in Bengali