পদ চেনার উপায়

পদ চেনার সহজ উপায়



পদ কথার অর্থ হল বাক্যে ব্যবহৃত শব্দ বা ধাতু। বাক্যে ব্যবহারের আগে কোনো ধ্বনিগুচ্ছকেই পদ বলা যায় না। কোনটি কী পদ তা চিনতে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। এই পোস্টে সেই সমস্যার সমাধানের জন্য কয়েকটি সহজ নিয়ম বলবো। এই নিয়মগুলি ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারলে পদ চিনতে আর সমস্যা হবে না।

বিশেষ্য পদ চেনার উপায়


মনে রাখতে হবে, বিশেষ্য ও সর্বনাম আলাদা পদ নয়, এ দুটি কার্যত এক‌ই জিনিস। বিশেষ্যের পরিবর্তে সর্বনাম ব্যবহার করা যায়।

১: যে কোনো নাম অবশ্যই বিশেষ্য হবে।

২: যা আমরা পাঁচটি ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করতে পারি তা বিশেষ্য হবে।

৩: যে পদকে বাক্যের উদ্দেশ্য রূপে ব্যবহার করা যাবে, সেটি বিশেষ্য বা সর্বনাম হবে। সর্বনাম চেনা সহজ, সর্বনাম না হলে অবশ্যই বিশেষ্য হবে।

৪: যে পদকে বাক্যে কোনো না কোনো কারক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে সেটি অবশ্যই বিশেষ্য অথবা সর্বনাম পদ হবে। 

৫: 'তা' ও 'ত্ব' প্রত্যয় যোগে যত পদ গঠিত হয়, যেমন: সততা, সরলতা, ভীরুতা, কাপুরুষতা, ঋজুতা, ঘনত্ব, বিশেষত্ব, মহত্ত্ব, এগুলি সব‌ই বিশেষ্য।

৬: বিশেষ্য পদের সাথে একটি ক্রিয়াপদ যোগ করে বাক্য গঠন করা যাবে।(সর্বনামের সাথেও যাবে) 

৭: বাস্তবে বা কল্পনায় যার অস্তিত্ব আছে তা বিশেষ্য হবে। 

বিশেষ্য সম্পর্কে বিস্তারিত  জানতে এখানে ক্লিক করুন 

বিশেষ্য পদ চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় জানার জন্য নিচের ভিডিওটি দেখুন


আমাকে YouTube-এ ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

ক্রিয়া পদ চেনার উপায়

কাজ বোঝালে ক্রিয়া হয় না। কাজ করা বা হ‌ওয়া বোঝালেই ক্রিয়া হয়। যেমন: 'খাওয়া' একটি কাজ কিন্তু 'খাই', 'খাবো', 'খাচ্ছে' ক্রিয়াপদ।

১: সমস্ত ক্রিয়াপদকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়: সমাপিকা ও অসমাপিকা। দেখতে হবে পদটি এই দুটি ভাগের কোনো একটিতে পড়ছে কি না।

২: সমাপিকা ক্রিয়া হলে তার একটি কাল(Tense) থাকবে। অর্থাৎ সমাপিকা ক্রিয়ার সাথে অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যৎ, যে কোনো একটি কালের যোগ থাকবে। যেমন: দেখেছি, দেখি, দেখছি, দেখ, দেখছ, দেখেন, দেখছেন, দেখছিস প্রভৃতি পদ বর্তমান কালের সাথে যুক্ত, তাই এগুলি সমাপিকা ক্রিয়া।

৩: ধাতুর সাথে 'ইয়া', 'ইতে', 'ইলে' প্রত্যয় যোগে অসমাপিকা ক্রিয়া তৈরি হয়‌। বাংলায় এই তিনটিই অসমাপিকা ক্রিয়ার ধরন আছে। এর বাইরে আর নেই।

ক্রিয়া পদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

বিশেষণ পদ চেনার উপায়


১: বিশেষণ পদ একা একা কিছু করতে পারে না। অন্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা ইত্যাদি বোঝায় ‌। বিশেষণ তাই বাক্যের উদ্দেশ্য হতে পারে না।

২: বিশেষণ পদ কারক হতে পারে না।

৩: বিশেষণ পদে শূন্য বিভক্তি ছাড়া অন্য বিভক্তি যুক্ত হতে পারে না। তবে বিশেষ্য পদের সাথে বিভক্তি যুক্ত হয়ে বিশেষণ পদ গঠিত হতে পারে।

৪: কেমন, কত, কীভাবে, কী জাতীয়, কততম(যেমন, একশো তম বর্ষ) ইত্যাদি প্রশ্নের জবাবে বিশেষণ পাওয়া যায়।

৫: ক্ত প্রত্যয়-জাত পদগুলি সাধারণত বিশেষণ।

বিশেষণ পদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

অব্যয় পদ চেনার উপায়

১: উপরের কোনো পদ না হলে সেটি অব্যয় হবে।

২: সংযোগ, বিয়োগ, বিকল্প, তুলনা, আবেগ, মনোভাব, পদে পদে ও বাক্যে বাক্যে সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি কাজ করলে সেটি অব্যয় পদ হবে।

৩: সমস্ত উপসর্গ ও অনুসর্গ অব্যয় পদের অন্তর্ভুক্ত।

৪: কিছু কিছু অব্যয় পদে বিভক্তি যুক্ত থাকতে দেখা যায় কিন্তু অব্যয় পদের বিভক্তি ইচ্ছে মতো বদলানো যায় না। হয় শূন্য বিভক্তি থাকে নতুবা একটি নির্দিষ্ট বিভক্তিই থাকে।

অব্যয় পদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

আর‌ও পড়ুন
বাংলা ব্যাকরণের সেরা ব‌ই
এই ওয়েবসাইটের সমস্ত পোস্ট পড়ার জন্য সূচিপত্রে ক্লিক করুন।

মন্তব্যসমূহ

SNEHASHIS বলেছেন…
খুব ভালো লাগল

আর‌ও পড়ে দেখুন

তির্যক বিভক্তি কাকে বলে

লোকনিরুক্তি কাকে বলে

মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ

অপিনিহিতি কাকে বলে

অভিশ্রুতি কাকে বলে?

ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য

নিরপেক্ষ কর্তা কাকে বলে

বিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে | অবিভাজ্য ধ্বনি কাকে বলে